গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরে কোনাবাড়ি এলাকায় ফুলের তোড়া নিয়ে মহিলা আওয়ামীলীগের এক নেত্রীর বাসায় লুটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর ভিক্টিম হলেন- গাজীপুর কোনাবাড়ী থানা মহিলা আওয়ামীলীগের থানা আহ্বায়ক হাজেরা বেগম।
গ্রেপ্তাররা হলো- গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ি নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. জিন্নত আলীর ছেলে এবং মোঃ সোহেল, একই এলাকার হীরা লালের ছেলে শ্রী সাজন।
গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ জাহিদুল হক জানান, গত বছরের ২৮ নভেম্বর বেলা ১১.৫০ মিনিটে গ্রেপ্তার দুইজনসহ চার যুবক নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়ে তৎকালে আহ্বায়কের নতুন পদপ্রাপ্ত মহিলা নেত্রী হাজেরা বেগমকে অভিনন্দন জানাতে এবং স্বাক্ষাৎকার নিতে ফুলের তোড়া নিয়ে তার বাসার বাইরে অপেক্ষা করে। পরে তারা মাস্ক পড়ে গেস্ট রুমের গেইটে গিয়ে বাসায় কে আছেন বলে ডাকাডাকি শুরু করে। এক পর্যায়ে মহিলা নেত্রী গেইট খুলে জিজ্ঞাসা করেন ‘আপনারা কারা, কি চান? তখন তারা বলে আমরা বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের লোক, করোনা সম্পর্কে এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপনার সাক্ষাৎকার নেয়ার জন্য এসেছি’। তখন হাজেরা বেগম তাদেরকে বাসায় ঢুকতে দেন। তারা নেত্রীর কক্ষে ঢুকার পর পরই একজন তার সঙ্গে আনা একটি পিস্তল বের করে হাজেরা বেগমকে ভয় দেখায় এবং তার হাত পা বেঁধে চাবি নিয়ে আলমারি থেকে নগদ তিন লক্ষ টাকা ও সাড়ে ৮ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে ঘটনার দিনই হাজেরা বেগম বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় মামলা (নং-১৮) দায়ের করেন। ঘটনাটি কোনাবাড়ী থানা পুলিশ প্রায় ৭ মাস তদন্ত করেও কোন রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় তদন্তাধীন অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ঘটনাটি তদন্তের জন্য পিবিআই-গাজীপুরকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। পরে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৬ জুলাই রাতে কোনাবাড়ী থানাধীন দেউলিয়াবাড়ী এলাকা থেকে সোহেলকে গ্রেপ্তার করে ১৮ জুলাই তাকে দুইদিন রিমান্ডে নেয়া হয়। এসময় জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল নিজে ওই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে বুধবার (২০ জুলাই) ভোরে কোনাবাড়ী থানাধীন নতুন বাজার এলাকা হতে শ্রী সাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার অল্প কিছুদিন আগে মামলার বাদী মহিলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তারা নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এবং নেত্রীকে ফুল দেয়ার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা নেত্রীর বাসায় লুট করেছে। যা তারা ২০ জুলাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্ধি দিয়েছে।