আন্তর্জাতিক ডেস্ক
খালিস্তানপন্থি শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারত-কানাডার টানাপোড়েনের মধ্যেই কানাডায় আরেক শিখ খুন। এবার কানাডার উইনিপেগে গ্যাংওয়ারে প্রাণ খুইয়েছেন সুখদুল সিং নামের এক শিখ গ্যাংস্টার। তিনি সুখা দুনেক নামেও পরিচিত। কানাডায় খলিস্তানপন্থি আন্দোলনে তার সক্রিয় সম্পৃক্ততা রয়েছে। ভারতের গণমাধ্যমের খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইতোমধ্যেই সুখদুল-হত্যার দায় স্বীকার করেছে প্রতিপক্ষ গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। বিষ্ণোই গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‘পাপের শাস্তি’ পেয়েছেন সুখদুল।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সুখদল নিজে একজন গ্যাংস্টার। তার বিরুদ্ধে সাতটি মামলা রয়েছে ভারতের পাঞ্জাবে। ২০১৭ সালে ভুয়া কাগজপত্র ব্যবহার করে ভারত থেকে কানাডায় পালিয়ে যান তিনি। সুখদলকে পালাতে সহযোগিতার দায়ে পাঞ্জাবের মেগা অঞ্চলের দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সুখদুল সিংহ ওরফে সুখা দুনেকা খালিস্তানপন্থি নেতা আর্শদীপ সিংহ ওরফে আর্শ ডালারের ঘনিষ্ঠ। এই আর্শদীপ সিংহকে সন্ত্রাসী তকমা দিয়েছে ভারত সরকার। দীর্ঘদিন থেকে আর্শদীপকে গ্রেফতার করতে চাইছে দিল্লি।
এর আগে, গত ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া রাজ্যে শিখ নেতা হারদ্বীপ সিং নিজ্জারকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে আলাদা ও স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের অন্যতম নেতা। তবে ভারত তাকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল। ভারতের অভিযোগ, নিজ্জার দেশটিতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিলেন।
নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের জন্য শুরু থেকেই ভারতকে দায়ী করে আসছেন কানাডায় খালিস্তানপন্থি শিখরা। সেদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে ভারতীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান ও কুশপুত্তলিকা দাহ করে বিচার দাবি করেছেন তারা।
চলতি মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের সাইডলাইনে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কাছে এ প্রসঙ্গ তুলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে খালিস্তানপন্থি শিখদের আন্দোলন প্রসঙ্গে কানাডা সরকারের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়টি সামনে আনেন। এছাড়া সেদেশে খালিস্তানপন্থিদের মদত দেওয়ার জন্য কানাডা সরকারের সমালোচনা করেন মোদি। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়।
সবশেষ সোমবার পার্লামেন্টে জাস্টিন ট্রুডো নিজ্জার হত্যার পেছনে ভারতীয় এজেন্টদের হাত থাকার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। তার এমন কথায় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে বড় ধরনের চির ধরে। মঙ্গলবার কানাডায় নিযুক্ত ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র’য়ের শীর্ষ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করে টরেন্টো। একই দিন পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে দিল্লিতে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠ এক কূটনীতিককে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয় ভারত।
এদিকে, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে এক বিবৃতি দিয়েছে ভারত সরকার। এমন টানাপোড়েনের মধ্যে কানাডায় আরেক খালিস্তানপন্থি শিখের খুনের খবর পাওয়া গেল।
আরও পড়ুন:
সারাবাংলা/আইই/এনএস