স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: বিএনপির কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হবে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কর্মসূচি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই নিতে হবে।
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ইতিপূর্বে অনেকগুলো কর্মসূচি আমরা সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি। এত কিছুর পরও। এর আগে রেড হয়েছে, অ্যারেস্ট হয়েছে। এর আগেও মারপিট করেছে। মেরে ফেলেছে গুলি করে। তারপরও কিন্তু আমাদের জায়গা থেকে আমরা এতটুকু সরিনি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে করতে চাই। শান্তিপূর্ণভাবেই এ সরকারের পতন ঘটাতে চাই।’
‘তবে, একটা জিনিস- যদি সরকার এবং রুলিং পার্টি, তারা যদি কোনো রকমের বাড়াবাড়ি করে, অত্যাচার-নির্যাতন করে, তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকেই বহন করতে হবে। তার যে পরিণতি হবে, তার দায়-দায়িত্ব তাদের। বিএনপি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এ কর্মসূচি পালন করেছে, করবে’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই যে লাঠি নিয়ে আসার কথা বলেছে, এগুলো সব প্রোভোকেশন বা উসকানি। আসলে পুরো ব্যাপারটাই প্রোভোকেটিভ বা উসকানিমূলক। একদিকে প্রধানমন্ত্রী বলছেন এক কথা, অন্যদিকে তাদের নিচের দিকে সম্পূর্ণভাবে সব কিছু জিম্মি করে ফেলতে চাইছে, তাদের এই দমননীতি দিয়ে।’
‘নয়াপল্টনে তো এখনও অনুমতি দেয়নি। শেষ পর্যন্ত যদি না দেয়, তাহলে কি বিকল্প ভেন্যুতে মহাসমাবেশ করবেন?এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটা আমরা শেষ পর্যন্ত দেখব। তারপর…আমরা তো বলেছি, আমরা পল্টনেই করতে চাই। এটা আমরা চিঠি দিয়েছি, মুখেও বলেছি।’
‘পুলিশের সহযোগিতা না পেলেও কী করবেন?’- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আরে আপনি পুলিশের সহযোগিতা কোথায় পেলেন? এটা আমাদের অধিকার। আমরা আমাদের অধিকার প্রয়োগ করব।’
‘মেয়র তাপস বলছেন লগি-বৈঠা নিয়ে আসার কথা, এ ব্যাপারে আপনাদের বক্তব্য কী’- অপর এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওটা ওদের কালচার। আমি বার বার বলেছি, এটা রিপিট করতে চাই না। আওয়ামী লীগ মানেই হচ্ছে একটা সন্ত্রাসী দল। আওয়ামী লীগ মানেই একটা দুর্নীতি পরায়ন দল। এটা অনেকবার বলেছি। কিন্তু আজকের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলতে চাই না। আজকের ব্রিফিংয়ে আমাদের একটাই আহ্বান সমস্ত দেশের মানুষের প্রতি, জাতির প্রতি এমনকি এই অবৈধ সরকারের প্রতিও যে, এই দেশকে রক্ষা করতে হলে, জাতিকে রক্ষা করতে হলে সবাই এগিয়ে আসুন। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে একটা নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। যাতে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। যার ফলে একেরপর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আজকে দেশকে তারা একেবারে খাদের কিনারায় নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। আমরা সেখান থেকে দেশকে টেনে তুলতে চােই। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই।’
‘শনিবার (২৮ অক্টোবর) তো একাধিক দলের প্রোগ্রাম। সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কিনা’?- এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা কোনো আশঙ্কা করছি না। আমরা আমাদের প্রোগ্রাম শান্তিপূর্ণভাবে করব।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহম্মদ নাসির প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনইউ