স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রাম নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় বেড়েছে। শিশু-কিশো্র,তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল। ঈদের ছুটিতে পরিবার-পরিজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে তারা ঘুরে বেড়িয়েছেন বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে।
রোববার (২৩ এপ্রিল) সকাল থেকেই নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, কাজির দেউড়ি শিশুপার্ক ও স্বাধীনতা কমপ্লেক্সে ছিল শিশু ও অভিভাবকদের ভিড়।
এদিকে নগরীর ব্যস্ততম সড়কের চিরচেনা অসহনীয় যানজটের দৃশ্যও চোখে পড়েনি। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে ছুটে যাওয়ায় নগরী এখনো অনেকটা ফাঁকা রয়েছে। বিভিন্ন রুটে গণপরিবহন চলাচল করলেও সেগুলোতে নেই যাত্রীর ভিড়।
কাজীর দেউড়ি শিশু পার্কে স্ব-পরিবারে আসা বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান থেকে সাপ্তাহিক ছুটি থাকলেও বাচ্চাদের নিয়ে তেমনি ঘুরতে বের হতে পারি না। তাই ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে ভালো লাগে।’
শিশু পার্কের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা প্রহরী রমজান আলী বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে অনেকেই শিশুদের নিয়ে পার্কে এসেছেন। মানুষ অতিরিক্ত চাপ। তাই সামাল দিতে একটু কষ্ট হচ্ছে।’
ঈদের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রামের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কে মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। অ্যামিউজমেন্ট পার্ক পরিচালনাকারী কনকর্ডের উপ-ব্যবস্থাপক (বিপণন) বিশ্বজিৎ ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের দ্বিতীয় দিন ও সরকারী ছুটি থাকায় অন্যদিনগুলোর তুলনায় আজকে একটু মানুষ বেশি। আজ (রোববার)সকাল থেকেই সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভিড় বহুগুণ বেড়েছে। আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় মানুষও এসেছে অনেক। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার মানুষ আজ এখানে এসেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু পর্যটক বেশি তাই গেদারিংও বেশি। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে। আমরাও আমাদের মতো পর্যটকদের বলছি যাতে কেউ কোনোরকম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে।’
পরিবার নিয়ে সি-ওয়ার্ল্ডে ঘুরতে আসা সরকারী কর্মকর্তা আহমেদ ইকবাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচ দিনের ছুটি কাজে লাগাতে পরিবার নিয়ে সি ওয়ার্ল্ডে ঘুরতে আসলাম। বাচ্চারা এখানে এলে ইচ্ছেমতো মজা করে, পানিতে দাপাদাপি করে। তাদের সঙ্গে আমরাও করি। কোনো বাধা-শাসন নেই। তাই তারা খুব আনন্দ পায়।’
সাদা বাঘের জন্য পরিচিতি লাভ করা চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানায় বাঘ থেকে শুরু করে সিংহ, বানর, হনুমান, ক্যাঙ্গারু ও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণসহ পশুপাখি দেখতে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে এসেছেন বয়স্করাও।
এদিকে দুপুর গড়াতেই পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকাও লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে। নগরীর বাসিন্দা ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রান্তের মানুষরাও জড়ো হয়েছেন চট্টগ্রামের এই পর্যটন কেন্দ্রটিতে। পতেঙ্গা সৈকতে কেউ সমুদ্রের পানিতে গা ভাসিয়েছেন। কেউবা সমুদ্রের পাড়ে বসে গান গেয়ে আনন্দ মেতেছেন। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতসহ নেভাল একাডেমিতেও পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিলো। এজন্য ওই এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহেদ মো.নাজমুল নুর সারাবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঈদে ঘুরতে পারে সেজন্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে সর্ব্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পতেঙ্গা সমুদ্রে সৈকতে দেড়শ পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যে কোনোরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমরা প্রস্তুত আছি।’
সারাবাংলা/আইসি/ এনইউ