স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: নারী ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায়।
মঙ্গলবার (০৬ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানবন্ধনে তিনি এ আহ্বান জানান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ ঘটনার প্রতিবাদে ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘আজকে সব পেশার মানুষ ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। শত নির্যাতনের মধ্যেও তারা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেনি, এটাই আমাদের ভরসা। এটা দেখে আমরা আশাবাদী। আমরা শেষ সংগ্রাম করতে পারব। আজ বাংলাদেশ ধর্ষিত, আজ দেশের স্বাধীনতা ধর্ষিত, আজ দেশের সার্বভৌমত্ব ধর্ষিত। আর নয় প্রতিবাদ। এখন থেকে প্রতিশোধ, এখন থেকে প্রতিরোধ।’
ছাত্রলীগের অপকর্মের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আজকে ওবায়দুল কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) কী জবাব দেবেন? একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালিত হয়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা লেখা-পড়া করেন অথবা যারা শিক্ষকতা করেন তাদের মান-সন্মান কোথায় থাকে? একটি নামকরা মহিলা কলেজের ঘটনা কয়েক বছর আগে শুনেছি। সেই কলেজের মেয়েদের যদি বলা হয় তুমি কোন কলেজে পড়? সে (নারী শিক্ষার্থী) নাম বলতে লজ্জা পায়।’
গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে মা-বোনের সম্ভ্রমহানি করেছিল করা? পাকিস্তানের বর্বরবাহিনী। আজকে যারা আমাদের মা-বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করছে তারা কোন বাহিনী? তারা কী কাদের বাহিনী, নাকি হাসিনা বাহিনী। এদেরকে ক্ষমতায় রাখলে এদেশের মানুষ নিরাপদ থাকবে না, এ দেশটাও নিরাপদ থাকবে না। মান-সন্মান তো দূরের কথা বেঁচে থাকার সুযোগ থাকবে না।”
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমার এলাকায় ২০১৮ সালের ভোটে এক মহিলা (সূবর্ণচর) ধানের শীষে ভোট দেওয়ার কারণে তাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। গতকাল সেই ঘটনার মামলার রায় হয়েছে। ১০ জনের মৃত্যুদণ্ড, ছয় জনের যাবজ্জীবন দিয়েছেন। আমি জানি না নিম্ন আদালতের এই রায় শেষ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে কার্য্কর হবে কিনা? কারণ এমন অনেক রায় কার্য্কর হয়নি। এই কারণে আমার সন্দেহ।”
ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘স্বাধীনতার পরেও দেশের এরকম অবস্থা ছিল। গত কয়েক দিনের ঘটনাবলী যদি আমরা দেখি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বডিফিল্ডার ফারুক সাহেব থেকে শুরু করে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। নোয়াখালীর সূবর্ণচরে ২০১৮ সালে একজন মহিলা তাদের কথা মতো ভোট না দেয়াতে তাকে ধর্ষণ করেছিল। এই অবৈধ সরকারের প্রধানতম বৈশিষ্ট হচ্ছে খুন-গুম-নির্যাতন-ধর্ষণ-মানুষের অধিকার হরণ, অর্থনীতি ধবংস করা, মানুষকে কষ্ট দেওয়া।’
সভাপতির বক্তব্যে সেলিমা রহমান বলেন, ‘আজকের এই মানববন্ধন প্রতিবাদের মানববন্ধন নয়, এটা হল প্রতিরোধের মানববন্ধন। আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলব। যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে তাদের সোনার ছেলেরা জাহাঙ্গীরনগর বিশববিদ্যালয়ে একজন নারীকে ধর্ষণ করেছে। শুধু একজন নারী নয়, এদের কীর্তিকাহিনী অনেক। এই সোনার ছেলেদের হাতে তারা লাঠি তুলে দিয়েছে, এই সোনার ছেলেদের হাতে তারা হাতুড়ি তুলে দিয়েছে। তারা এখন সাধারণ মানুষের ওপরে অত্যাচার-নির্যাতন করছে।’
সংগঠনের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য শিরিন সুলতানা, রাশেদা বেগম হীরা, নিলোফার চৌধুরী মনি, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের রুহুল আমিন গাজী, কাদের গণি চৌধুরী, নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের তাইফুল ইসলাম টিপু, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আরিফা সুলতানা রুমা, নাদিয়া পাঠান পাপন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এনইউ