আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একটি ‘ন্যায়সঙ্গত ও বহুমুখী’ বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য মস্কো এবং বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন। বিপরীতে, তিনি পশ্চিমা নেতাদের অভিযুক্ত করে বলেছেন, তারা অন্যান্য দেশের সার্বভৌম স্বার্থকে উপেক্ষা করে বিশ্বব্যাপী আধিপত্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। মঙ্গলবার (১৪ মে) চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সিনহুয়ার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে পুতিন এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে রুশ প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সমতা ও বিশ্বাসের নীতি এবং সেইসঙ্গে প্রতিটি সার্বভৌম দেশের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধার উপর নির্ভর করে ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী রুশ-চীনা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছেন।
পুতিন বলেন, ‘পৃথিবী মানবতার দোলনা। পৃথিবী আমাদের সবার বাড়ি এবং আমরা সবাই এর বাসিন্দা হিসেবে সমান। আমি নিশ্চিত যে, এই দৃষ্টিভঙ্গিটি গ্রহের বেশিরভাগ মানুষই পোষণ করে।’
তিনি পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনা করে বলেন, ‘মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা অভিজাতরা সভ্যতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সম্মান করতে জানে না। শতাব্দী পুরানো ঐতিহ্যগত মূল্যবোধকে প্রত্যাখ্যান করে তারা। অন্য জাতি কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে বা করবে না— সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও তারা কেড়ে নিয়েছে। তারা পুরানো দিনের মতো অন্য জাতির খরচে তাদের নিজেদের ভালো নিশ্চিত করতে চায়। সেই লক্ষ্যে নব্য-ঔপনিবেশিক পদ্ধতি অবলম্বন করছে।’
বৃহস্পতিবার থেকে দুই দিনের চীন সফর শুরু করার কথা রয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের। গত বছর পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর শি জিনপিং তার প্রথম বিদেশ সফরের জন্য রাশিয়াকে বেছে নিয়েছিলেন। রুশ নেতাও তার পঞ্চম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে প্রথম বেইজিং সফরে যাচ্ছেন।
২০২৩ সালের মার্চে শি জিনপিংয়ের মস্কো সফরের সময় পাঁচ ঘণ্টারও বেশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছিলেন তিনি ও পুতিন। বৈঠকের সময়, চীনের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের সম্পর্ক এবং বাস্তব সহযোগিতা জোরদার করার জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
দুই নেতার আসন্ন বৈঠকেও প্রধান এজেন্ডা থাকবে ইউক্রেন যুদ্ধ। পুতিন উল্লেখ করেছেন, সংকটের শুরু থেকেই চীন একটি কূটনৈতিক সমাধান খুঁজতে কাজ করেছে। তিনি সিনহুয়াকে বলেন, ‘ইউক্রেন বা তার পশ্চিমা সমর্থকদের কেউই পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার ভিত্তিতে একটি সমান, সৎ এবং উন্মুক্ত সংলাপের জন্য প্রস্তুত ছিল না।’
এমনকি পশ্চিমারা রাশিয়ার অর্থনীতিকে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ধ্বংস করার চেষ্টা করলেও, রাশিয়া ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য প্রায় ২২৮ বিলিয়ন বেড়েছে, যা ২০১৯ সালের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। পুতিন বলেন, ‘পশ্চিমের বৈশ্বিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের ফলাফল আবারও আমাদের সার্বভৌম গতিধারা এবং জাতীয় স্বার্থ অনুসরণের কৌশলগত প্রজ্ঞা প্রমাণ করে।’
সারাবাংলা/আইই