স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে বিচারককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও গালিগালাজের অভিযোগে এক পুলিশ কনস্টেবলকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে সাইবার আইন অনুযায়ী অপরাধ অ-আমলযোগ্য হওয়ায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) গ্রহণ করে তাকে পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে অপর একটি মামলায় হাজিরা দিতে আসা ওই পুলিশ কনস্টেবলকে আদালতের নির্দেশে আটক করে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে বিচারককে গালিগালাজের লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী সৈয়দ নুর-এ খোদা।
অভিযুক্ত সঞ্জয় চৌধুরীর (২৬) বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কাশিয়াইশ ইউনিয়নের মৌলভীর দোকান এলাকায়। তিনি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ইউনিটের অধীনে কক্সবাজারের উখিয়ায় কর্মরত আছেন।
গত বছরের ১৯ জুলাই সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগে তার স্ত্রী ইমা বসু চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করেন। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে মামলাটির কার্যক্রম চলমান আছে। এ অবস্থায় মামলার বাদী ইমা বসু সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে তাকে হুমকি দেওয়া এবং বিচারক জুয়েল দেবকে গালিগালাজ করার অভিযোগ তথ্যপ্রমাণসহ আদালতে দাখিল করেন।
ইমা বসু সারাবাংলাকে বলেন, ‘ব্যক্তিগত হোয়াটস অ্যাপ নম্বরে সে (সঞ্জয়) আমাকে কয়েকবার হুমকিধমকি দেয়। আমি থানায় জিডিও করেছি। এরপর সে আমার পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেটের নাম ধরেও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে বিভিন্ন কথাবার্তা লিখে। আমি সেগুলোর স্ক্রিনশট নিয়ে আদালতে জমা দিই।’
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) নিশান চাকমা সারাবাংলাকে বলেন, ‘হোয়াটস অ্যাপে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তার তথ্যপ্রমাণ আমলে নিয়ে আদালতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে বক্তব্যগুলো ওই পুলিশ কনস্টেবলের বলে প্রমাণ হয়েছে। আদালতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার নির্দেশ দেন।’
জানা গেছে, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) যৌতুকের মামলায় সঞ্জয়ের আদালতে হাজিরার দিন নির্ধারিত ছিল। তিনি মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে হাজির হন। এ সময় বিচারক তাকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।
জানতে চাইলে নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার অতনু চক্রবর্তী সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিচারকের বেঞ্চ সহকারী মামলার এজাহার জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু যাচাই-বাছাইয়ে দেখা গেছে, এ অভিযোগ সাইবার আইন অনুযায়ী আমলযোগ্য নয়। এজন্য নিয়মিত মামলার পরিবর্তে জিডি গ্রহণ করা হয়েছে। এখন অভিযোগে জিডিমূলে তদন্ত হবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম