স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দ্বীপাঞ্চলীয় উপজেলা মহেশখালীর সঙ্গে কক্সবাজারের সড়ক পথে সংযোগ তৈরির জন্য সেতু নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। ঢাকায় অবস্থানরত মহেশখালীর চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষেরা মানববন্ধনে যোগ দেন। শনিবার (১৩ নভেম্বর) প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের দ্বীপাঞ্চলীয় উপজেলা মহেশখালীর ৫ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি একটাই ‘মহেশখালী-কক্সবাজার নৌপথে সেতু’ বাস্তবায়ন করা হউক। ইতোমধ্যে সেতু নির্মাণে একাধিকবার সম্ভাব্যতা যাছাই করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম সেতু নির্মাণে বা সেতু নির্মাণের আগে ফেরি স্থাপনে কয়েকটি স্থানও পরিদর্শন করেন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- মহেশখালীর পুরাতন জেটি, আদিনাথ মন্দির জেটি ও চরপাড়া এবং কক্সবাজার সদরের খুরু স্কুল, চৌফলদন্ডি ও নাজিরারটেক এলাকা।
বক্তারা আরও বলেন, মহেশখালীবাসী তথা যাত্রী সাধারণের শতভাগ ঝুঁকি নিয়ে এ নৌপথে যাতায়াত করতে হয়। এমনও নজির আছে যে, ঝুঁকিপূর্ণ ডেলিভারি রোগীকে মহেশখালী হতে কক্সবাজার রেফার করলে যাতায়াতকালে নদীপথে বোটের মধ্যেই ডেলিভারি হয়ে যায়। এ সময় মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে থাকে প্রসূতি মা ও শিশু। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌপথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। আবার অনেকের যাতায়াতও অসম্ভব হয়ে পড়ে। রাত্রে জরুরি মুহূর্তে বোট পাওয়াও মুশকিল হয়ে পড়ে। আবার রাত্রে চলাচল নিরাপদও নয়।
বক্তারা বলেন, মহেশখালীবাসী মনে করেন যে, প্রধানমন্ত্রী মুখ দিয়ে যা ঘোষণা করেন তা বাস্তবায়ন হয়। যেমন- পদ্মাসেতু নিয়ে অনেকে অনীহা দেখিয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে পদ্মাসেতু হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা মতে পদ্মাসেতুর কাজ যথাসময়ে শুরু হয়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হতে চলেছে।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারের দ্বীপাঞ্চলীয় উপজেলা মহেশখালীতেই বাস্তবায়ন হচ্ছে বাংলাদেশের বৃহৎ মেগা প্রকল্প মাতারবাড়ী কয়লা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। মহেশখালীতেই নির্মিত হয়েছে এলএনজি গ্যাস টার্মিনাল। মহেশখালীর এই গ্যাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামের আনোয়ারা পর্যন্ত গ্যাস সঞ্চালন করা হচ্ছে। মহেশখালীর সোনাদিয়ায় ইকু ট্যুরিজমের উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এছাড়াও মহেশখালীতে আরও ছয়টি ইকোনোমিক জোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
মহেশখালীতে উৎপাদিত লবণ, পান, চিংড়ি ও শুটকি রফতানির ফলে সরকারের রাজস্ব খাতে বাড়ছে। একটা সেতুই পাল্টে দিতে পারে পুরো মহেশখালীর চিত্র। তাই মহেশখালীর ৫ লাখ মানুষের প্রাণের দাবি, যেকোনো দিক ‘মহেশখালী-কক্সবাজার নৌপথে সেতু’ নির্মাণ করা করা এখন সময়ের দাবি।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম