মুনা চৌধুরী, মুনার হ্যাঁশেল পেইজের স্বত্বাধিকারী। বিয়ে হয় রামুর সুনাম ধন্য এক পরিবারে সন্তান মাহবুব আলম চৌধুরীর সাথে। তিন ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার। কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। ছোট বেলা থেকে গ্রামে আমার বড় হওয়া, ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা করে কিছু হওয়ার, নিজের পায়ে নিজে দাড়ানোর আর এই অদম্য ইচ্ছা শক্তি মুনাকে নিয়ে যায় এল.এল.বি পর্যন্ত, সালটা ছিল
২০০০।
কিন্তু সব মানুষের তো আর তার ইচ্ছা করলেই সব পূরণ হয় না, কিছু না কিছু স্বপ্ন তার অপূন্য থেকেই যায়। আমার ক্ষেত্রেও হয়তো ভাগ্য আমার সাথে ছিল না, তাই এল.এল.বি কম্প্লিট না করার আগেই আমার বিয়ে হয়ে গেল।
তবে হ্যাঁ, এই কথা সত্য ভাগ্য হয়তো পুরোপুরি আমাকে অস্বীকার করেনি, কিছুটা হলেও আমার সাথে ছিল, আর তাইতো বিয়ের পর, আমার স্বামী আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে, না না!! সাংসারিক কাজ করার জন্য না!! আমার ওই যে পিছিয়ে পড়া স্বপ্ন, নিজের পায়ে দাড়ানোর স্বপ্ন, ব্যাস,আমার স্বামীর সাপোর্ট সাথে নিয়েই আমি এক স্কুলের শিক্ষিকা হয়ে গেলাম ২০০৭ এ।
ভালোই লাগতো টিচারী করতে, কিন্তু পরে আমার তৃতীয় বেবি হওয়ার পর ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। কারণ বাবুর খেয়াল ও রাখতে হবে।
কিন্তু আমার স্বামী যথারীতি সাপোর্ট করেই গেল আর আমার ইচ্ছাও থেমে থাকেনি। এরপর অনেক বছর কেটে গেল, চিন্তা করলাম আবার চাকরী শুরু করব, কিন্তু এক অদৃশ্য আত্মা আমাকে বাধা দিচ্ছিল, তাই কি করব চিন্তা করতে করতে হঠাৎ ভাবলাম আমার বানানো খাবার তো সবাই খুবই পছন্দ করে, কেননা এই পছন্দ করা আর খাবার দুইটাই একটা পর্যায়ে নিয়ে গেলে তো আর মন্দ হয় না।
সেই ভাবনা থেকেই রান্নাকে আরো পারফেক্ট করতে ট্রেনিং শুরু করি।
নিজের তিলে তিলে কর কিছু সঞ্চয় দিয়ে আমি ক্যাটারিংয়ের প্রয়োজনী জিনিসপত্র কেনা শুরু করি, পাশাপাশি ট্রেনিং শুরু করি। যা ছিল আমার জন্য আসলেই চ্যালেজিং। আমার মনোবলই আমার বড় সম্বল আলহামদুলিল্লাহ। খুব সামান্য পুঁজি নিয়ে আজ আমার এত টুকুতে আসা।
পরিবার সমাজ ও সব ধিক থেকে আমি কখনো বাঁধার সম্মুখীন হয়নি বরং বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা পেয়েছি। এই সহযোগিতা সামনে নিয়ে
২০১৯ সালে আরো একটা কোর্চ নিতে ঢাকা চলে যায়। আরো অনেক গুলো রান্নার কোর্স আমি কমপ্লিট করি, সাথে সাথে আমার কাটারিং বিজনেস চালিয়ে যায়।
আজ প্রায় ৪ বছর আমি এই বিজনেস চালিয়ে যাচ্ছি, এই ব্যবসা থেকে আমার আয়ও মাশাল্লাহ্আ। আমার আগামীর ইচ্ছে স্বাস্থ্য সম্মত খাবার মানুষের কাছে ও কক্সবাজারের পর্যটকের হাতে তুলে দিতে ব্যাপক আকারে কাজ করা। মান সম্মত খাবারের দোকান চালু করা।
গ্রাম বাংলার পিঠা পুলি ও ভালো মানের আচারের দোকান দেওয়া। খাবারের উপর ট্রেনিং সেন্টার চালু করা। সারা বাংলাদেশে আচারের সাপ্লাই দেওয়া। গ্রামের অসহায় নারীদের নিয়ে কাজ করা।
আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, যাতে আমি আমার স্বপ্নকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, ইনশাল্লাহ। হাজারো নারীর অনুপ্রেরণা ও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে পারি।