নিজস্ব প্রতিবেদক : সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ্য বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক বাংলাদেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে শপথবাক্য পাঠ করান।
শপথ অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী বেগম রাশিদা খানম, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ, আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতিগণ, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীগণ অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিদায়ী প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন অবসরে যাওয়ায় রাষ্ট্রপতি সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিককে এ নিয়োগ দেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক গেজেট প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নতুন প্রধান বিচারপতি শপথ নেওয়ার দিন থেকেই এই নিয়োগ কার্যকর হবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক ২০২৩ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অবসরে যাবেন। বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিক আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চের সদস্য ছিলেন। তিনি সংবিধানের বিতর্কিত ১৬তম সংশোধনী বাতিল করেছিলেন, যা জাতীয় সংসদকে অক্ষমতা বা অসদাচরণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা দিয়েছিল।
তিনি ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে ঢাকা জজ কোর্টে আইন পেশায় যোগ দেন হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। ১৯৮৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৮ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। ২০০৯ সালে হাইকোর্ট ডিভিশনের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তার বড় ভাই বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী আপিল বিভাগের বিচারপতি থেকে অবসরে গিয়েছেন।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী কুষ্টিয়ার সন্তান। তিনি খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা আবদুর গফুর মোল্লা ও মা নূরজাহান বেগম।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৭২ সালে খোকসা জানিপুর পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭৪ সালে সাতক্ষীরার সরকারি পিসি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক (আইএসসি), পরে একই কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি মাস্টার্স করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে।
এরপর ধানমন্ডি ল কলেজ থেকে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এলএলবি ডিগ্রি নেন। ১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা জজ কোর্টে আইন পেশায় যোগদান করেন। ১৯৮৩ সালে হাইকোর্ট বিভাগে এবং ১৯৯৮ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০০১ সালে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি, ২০০৯ সালে হাইকোর্ট ডিভিশনে স্থায়ী বিচারপতি এবং ২০১৩ সালের ২৮ মার্চ আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।