সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণের কষ্ট হচ্ছে। আপনাদের শুধু এইটুকু বলব, চেষ্টার কোনো ক্রটি নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে সংকট উত্তরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। করোনাকালেও তিনি রাতে ঘুমাতে পারেননি। এখনও জনগণের চিন্তায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কিভাবে মানুষকে একটু আরাম দেওয়া যায়, স্বস্তি দেওয়া যায়; যারা কষ্ট পাচ্ছেন তাদের কষ্ট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি মানুষকে স্বস্তি দিতে চাইছেন।
শনিবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মহিলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
‘স্বৈরশাসক’ জিয়াউর রহমানের আমলে ইমডেমনিটি আইনের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। বিএনপি আমাদেরকে শত্রু ভাবে। অথচ ইতিহাস বলে আমাদের সঙ্গে শত্রুতা তারাই বারবার করেছে। আমরা শত্রুতা করিনি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তাকে টার্গেট করার পরও তিনি কোকোর মৃত্যুর পর বেগম জিয়ার বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন শোকাহত মাকে সান্ত্বনা দিতে। কী হলো? ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের গেট বন্ধ? শেখ হাসিনার মুখের ওপর। তাহলে প্রতিপক্ষের মতো আচরণ আমরা করতে চেয়েছি? গণভবনে সংলাপ করেছে বঙ্গবন্ধু কন্যা কিন্তু তারা আমাদেরকে শত্রুই ভেবে আসছে? শত্রুতাই করছে। বারবার তারা শত্রুতা করছে।’
আজকে বাংলাদেশ সারাবিশ্ব সংকটের একটা নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলা করছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। দ্রব্যমূল যেভাবে বেড়ে গেছে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, এটি ঠিক। গরিব মানুষ, প্রান্তিক মানুষ। কিন্তু আমাদের সামনে কোনো উপায় ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘সারা দুনিয়া যেভাবে মূল্যবৃদ্ধি, ইনফ্লুয়েশন মূল্যস্ফীতি জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি স্বয়ং যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের দেশে দেশে। আজকে জার্মানিতে রাইন নদীর পানি এমন লোতে গিয়ে পৌঁছেছে সেখানে জাহাজ চলতে পারছে না। ইতালীর ১৫”শ লেকের অধিকাংশ শুকিয়ে গেছে। আজকে ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এক হাজার ফায়ার ফাইটার লাগিয়েও এখনও আগুন নেভানো যায়নি।’
বৈশ্বিক সংকটের কারণে মূল্যবৃদ্ধিতে এখন কোন দেশ বাকি নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেউ তো আজকে আরামে নেই। আমরা বাংলাদেশের জনগণ যাদের কষ্ট হচ্ছে আপনাদের শুধু এইটুকু বলব, চেষ্টার কোন ক্রটি নেই।’
পৃথিবীর বহু দেশ আজকে সমস্যা জর্জরিত। আর এটাকে কেন্দ্র করে ফ্রান্সের বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেনি, আমেরিকার বিরোধীদল সরকার উৎখাতে নামেনি। যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল সরকার উৎখাতে প্রটেস্ট করেনি। জার্মানির বিরোধী দল, জাপানের বিরোধী দল সরকার উৎখাতে নামেনি।’
‘আমাদের প্রশ্ন সেখানে , এরা (বিএনপি) কি চায়? সহযোগিতা চেয়েছিলাম আমরা। এই সংকটে সারা দুনিয়া সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আর বাংলাদেশে আজ তারা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে।’
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজকে নিজেরা ইচ্ছেমত মিছিল করছে পল্টন-প্রেস ক্লাবের সামনে। এতোদিন বলত আওয়ামী লীগ আমাদের মিছিল-মিটিং করতে দিচ্ছে না। এখন যখন নেত্রী বলেছেন, ওরা করুক। যখন মিছিল মিটিং করতে পারছে তাদের সাহসের ডানা বিস্তারিত হয়ে গেছে। এখন তারা বলে বিদেশি শক্তির চাপে বাধা দিচ্ছে না, তাহলে এখন স্বীকার করলেন পুলিশ বাধা দিচ্ছে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলতে বলতে আজকে বেপরোয়া ড্রাইভার হয়ে গেছে। আগুন নিয়ে আসবেন না বলে দিচ্ছি। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করুন। আগুন সন্ত্রাস নিয়ে যদি নামতে চান তাহলে বলবো, জনতার প্রতিরোধ সুনামিতে পরিণত হবে।’
মহিলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সুরাইয়া আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রহিমা আক্তার সাথীসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এনআর/একে