প্রত্যেক বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস হিসাবে পালন করে। ট্রান্সফিউশনের (transfusion) জন্য নিরাপদ রক্ত এবং রক্তজাত পণ্যের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশ্বে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই এটি পালন করা হয়। গ্লোবাল হেলথ কমিউনিটি (Global health community) এই দিনটিতে একত্রিত হয়ে সাধারণ জনগণকে তাদের নিজ নিজ স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক, বেতনহীন রক্তদানকারীদের যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, তা স্মরণ করিয়ে দেয়।
করোন ভাইরাস মহামারীর মধ্যে রক্তদান পরিষেবাটির গুরুত্ব আরও একবার জনসমক্ষে এসেছে। মহামারিতে বিভিন্ন বিষয়ে একাধিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, বহু দেশে বিশেষত ভারতে রক্তদানকারীরা ট্রান্সফিউশনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে এমন রোগীদের রক্ত এবং প্লাজমা দিয়ে গেছে।
তবে, গত মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (ICMR) এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক রিকভারি (RECOVERY) ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশের পরে ক্লিনিকাল ম্যানেজমেন্ট প্রোটোকল (clinical management protocol) থেকে কোভিড -১৯ এর কনভ্যালসেন্টস (convalescent) প্লাজমা ব্যবহারকে সরিয়ে দিয়েছে। মেডিক্যাল জার্নালটি উল্লেখ করেছে যে বেশি পরিমাণ অ্যান্টিবডি সহ প্লাজমার ব্লাড ট্রান্সফিউশন করলে তা ২৮ দিন পরে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে না।
যদিও, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় যখন কোভিডের সংখ্যা বেড়ে যায়, তখন যেসব রোগীর জীবনের অন্য ঝুঁকির স্বাস্থ্য পরিস্থিতি যেমন থ্যালাসেমিয়া, অ্যানিমিয়া এবং ব্লাড ম্যালিগন্যান্সি রয়েছে তাদের এই সংকটপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়া দরকার। প্রসঙ্গত, প্রসবের সময় মহিলাদের রক্তের সংকট দেখা যায়। যার জন্য প্রসবের পরে রক্তক্ষরণ মাতৃত্বের মৃত্যুর অন্যতম একটি কারণ।
তাই, বিশ্বব্যাপী রক্তদাতাদের অসাধারণ পরিষেবাকে তুলে ধরতে এবছর WHO স্লোগান প্রকাশ করেছে “রক্ত দিন এবং বিশ্বকে বাঁচিয়ে রাখুন।” চিকিৎসায় সংকটের সময়ে এই অপরিহার্য প্রচেষ্টাটি স্বাভাবিক এবং জরুরী সময়ে নিরাপদ এবং পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে সু-সংগঠিত, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ স্বেচ্ছাসেবী, নিরপেক্ষ রক্তদাতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছে।
মহামারী চলাকালীন অনেক রক্তদাতাই রক্তদানের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছে। তবে রক্তদান যে মানুষের জীবন বাঁচাতে একটি মহৎ কাজ যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্প্রদায় সবসময়ই জানিয়ে এসেছে।