স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো : মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে বিতণ্ডার জেরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত এক আনসার সদস্যকে বেধড়ক পিটিয়েছেন তিন ছাত্র। পরে অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষের সঙ্গে বসে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির ফয়সালা করেছে। তিন ছাত্র চমেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে হাসপাতালের গোলচত্বরের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আনসার ক্যাম্পের কমান্ডার মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন।
অভিযুক্ত তিন ছাত্র হলেন, শাহরিয়ার মহিউদ্দিন রাহাতুল ইসলাম, কায়েস মাহমুদ ও মো. জুনায়েদ।
আনসার কমান্ডার জিয়াউর রহমান জানিয়েছেন, কায়েস মাহমুদ চমেকের এমবিবিএস ও জুনায়েদ ডেন্টাল কোর্সের ছাত্র এবং শাহরিয়ার মহিউদ্দিন রাহাতুল ইসলাম শিক্ষানবিশ চিকিৎসক।
মারধরের শিকার আনসার সদস্য খোকন মিয়া বৃহস্পতিবার দুপুরে চমেক হাসপাতালের গোলচত্বরে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
জিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুর ২টা ১০ মিনিটে রাহাতুল মোটর সাইকেল চালিয়ে গোলচত্বরে আসেন। তার সঙ্গে জুনায়েদ ছিল। কায়েস আগে থেকে সেখানে ছিল। রাহাতুল বাইক নিয়ে হাসপাতালের নিচতলায় উঠতে চাইলে আনসার সদস্য খোকন বাধা দেন। কারণ সেখানে বাইক নিয়ে ওঠার অনুমতি নেই। খোকন তাদের নির্ধারিত জায়গায় বাইক পার্কিংয়ের কথা বললে তারা ঝগড়া শুরু করে। একপর্যায়ে তারা খোকনকে মারধর করে।’
চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম আশেক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মোটরসাইকেল পার্কিং নিয়ে কয়েকজন ছাত্রের সঙ্গে একজন আনসার সদস্যের ঝামেলা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’
ফাঁড়ির আনসার কমান্ডার জিয়াউর রহমান জানান, মারধরের পর আনসারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে লিখিতভাবে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অভিযোগ করা হয়। তিন ছাত্রের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে সন্ধ্যার পর পরিচালক এ বিষয়ে সালিশ বৈঠকে বসেন। এতে আনসার, চমেক প্রশাসন, অভিযুক্ত তিন ছাত্র ও পুলিশের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
‘পরিচালক স্যার তিনজন ছাত্রের শিক্ষাজীবন বিবেচনায় আমাদের নমনীয় হওয়ার অনুরোধ করেন। তিন ছাত্র ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটানোর অঙ্গীকার করে মুচলেকা দেন। এছাড়া মারধরের শিকার খোকন মিয়ার কাছে ক্ষমা চান। তখন আমরা আর তাদের বিরুদ্ধে মামলা করিনি। তবে যে ঘটনা ঘটেছে, এটা খুবই নিন্দনীয় এবং আমরা সাধ্যমতো এর প্রতিবাদ করেছি।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে একজন আনসার সদস্যের গায়ে কয়েকজন ছাত্র হাত তুলেছিল। আমি উনাদের ডেকে মীমাংসা করে দিয়েছি।’
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত তিন ছাত্র চমেকের শিক্ষার্থীদের কাছে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাদের বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।
সারাবাংলা/আরডি/একে