স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির ঘটনায় এক দম্পতি এবং ওই হাসপাতালের তিন কর্মচারীসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়ায় ‘মুষড়ে পড়া’ নারী মাতৃত্বের আকাঙ্ক্ষা পূরণে স্বামী ও হাসপাতাল কর্মচারীদের সহায়তায় নবজাতকটিকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল।
সোমবার (২৯ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা থেকে দম্পতিকে গ্রেফতার করে নগরীর ইপিজেড থানা পুলিশ। আগের দিন হাসপাতালের তিন কর্মচারীকে গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্যে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করে নবজাতকটি উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল করিম।
গ্রেফতার দম্পতি হলেন- শিমু দাশ (২০) ও রিমন মল্লিক (২৬)। তাদের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ গ্রামে।
এর আগে, গ্রেফতার হাসপাতালের তিনজন হলেন- নগরীর ইপিজেড থানার নেভী হাসপাতাল গেইটের মমতা মাতৃসদন-২ হাসপাতালের সুপারভাইজার মোরশেদ আলম (৪২) এবং দুই নিরাপত্তা কর্মী মো. সেলিম (৩৯) ও আবুল কাশেম (৩০)।
গত রোববার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে মমতা মাতৃসদন থেকে একদিন বয়সী এক নবজাতক চুরি হয়। এ ঘটনায় বাবা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওসি আব্দুল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগ পেয়েই আমরা প্রথমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেক করি। তিন কর্মচারী ঘটনার সময় হাসপাতালে ছিলেন। তাদের আচরণ আমাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নিই। একপর্যায়ে তারা স্বীকার করে, তারা তিনজনসহ আরও কয়েকজন নার্স-আয়া মিলে নবজাতকটি চুরিতে সহযোগিতা করেছে। নবজাতক যাদের হেফাজতে আছে তাদের ঠিকানা শনাক্ত করি। টানা ৩০ ঘণ্টার অভিযানে আনোয়ারা থেকে নবজাতক চুরিতে জড়িত মূল হোতা শিমু ও তার স্বামীকে গ্রেফতার করি।’
গ্রেফতার হাসপাতালের তিন কর্মচারীকে সোমবার আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানান ওসি।
এদিকে গ্রেফতার দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি আব্দুল করিম বলেন, ‘শিমুর গর্ভে থাকা পাঁচ মাসের বাচ্চা সম্প্রতি নষ্ট হয়ে যায়। এতে মুষড়ে পড়ে শিমু এবং অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে। পাগলপ্রায় শিমুকে সামলাতে তার স্বামী একটি বাচ্চার জন্য বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। শেষপর্যন্ত তারা মমতা মাতৃসদনের তিন কর্মচারীর দ্বারস্থ হন এবং তাদের সহায়তায় শিশু নার্স সেজে একদিনের নবজাতকটিকে চুরি করে নিয়ে যান। চুরির সময় হাসপাতালের ভেতরেই ঘোরাঘুরি করছিলেন স্বামী রিমন।’
গ্রেফতার দম্পতিকে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতে হাজির করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
সারাবাংলা/আরডি/আইই