সারাবাংলা ডেস্ক
চট্টগ্রাম ব্যুরো: হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, ‘মুজিব কোট গায়ে দিলেই সবাই আওয়ামী লীগ হয় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনেক ভালো কাজ আজ নষ্ট করে দিচ্ছে কারা? কেন দিচ্ছে? গায়ে তাদের কিসের পোশাক? অর্জনগুলো নষ্ট করে দিচ্ছে আর তারপর যদি বলেন কাউয়া ঢুকেছে, আর পাখি ঢুকেছে, হবে? এতে সুযোগ পাচ্ছে কারা? প্রতিক্রিয়াশীলরা।’
শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। হিন্দু সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে অসহায় মানুষের মাঝে বস্ত্র বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধকের বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘বাংলাদেশের ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের সমস্যা শুধু তাদের সমস্যা নয়। এটা জাতীয় সমস্যা। ১৯৪৭ সালে পূর্ব বাংলার ২৯ দশমিক ৭ ভাগ ছিল সংখ্যালঘু। ১৯৭০-এ তা নেমে আসলো ২০ শতাংশে। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সেটা ১০ শতাংশে নেমে এল কেন? কী কারণে? তারা দেশত্যাগে বাধ্য হলো কেন? বাধ্য করছেন কারা?’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও কেন পুলিশ প্রহরায় পূজা করতে হবে? আর পুলিশ পাহারায় পূজা করে আমাদেরকে বলতে হবে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির। কেন বলতে হবে? এটা তো সত্য কথা না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যদি অনন্য নজির থাকতো তাহলে তো পুলিশ প্রত্যাহার করে স্বাধীনভাবে যদি পূজার ব্যবস্থা করা যেত, তাহলেই বোঝা যেত সম্প্রীতির লেবেলটা কোন জায়গায়।’
জিয়াউর রহমান ও এরশাদের প্রেতাত্মা থেকে দেশ এখনও মুক্ত হতে পারেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান রচিত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর ভিত্তি করে। কিন্তু পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে পাকিস্তান বানানো অপচেষ্টা শুরু হয়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে পাকিস্তানি সংবিধানের আদলে বাংলাদেশের সংবিধানের সাম্প্রদায়িকীকরণ করেছে। একই ধারায় জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মকে রাষ্ট্রধর্ম করেছে। এর লক্ষ্য একটাই- পাকিস্তানি আদলে বাংলাদেশেও ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুকে রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘুতে পরিনত করা। আজ ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায় আছে, কিন্তু জিয়াউর রহমান ও এরশাদের প্রেতাত্মা থেকে এখনো বাংলাদেশের সংবিধান মুক্ত হতে পারেনি।’
পরিষদের উপদেষ্টা সাংবাদিক প্রীতম দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস গনি চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমও