স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ওয়ালটনের একটি শোরুম থেকে ফ্রিজ-টেলিভিশন উধাওয়ের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে একজন কথিত ছাত্রলীগ নেতাও আছেন। পুলিশ তথ্য পেয়েছে, ওয়ালটনের পরিবেশক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত একজনের সহায়তায় গুদাম থেকে এসব মালামাল ‘চুরি’র ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে নগরীর বায়েজিদ ও চান্দগাঁও থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।
গ্রেফতার তিন জন হলেন— কথিত ছাত্রলীগ নেতা মো. আরাফাত (৩০) এবং মো. পারভেজ (৩৫) ও মো. সালাউদ্দিন (৩০)।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর সারাবাংলাকে জানান, নগরীর পাঁচলাইশ থানার বাদুরতলায় নেওয়াজ প্লাজার পেছনে ওয়ালটনের একটি পরিবেশক প্রতিষ্ঠান তাদের গুদামে রক্ষিত মালামালের তালিকা যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে গরমিল শনাক্ত হয়। এতে দেখা যায়, গুদামে ২৫টি ওয়ালটন এলইডি টিভি ও ১২টি ওয়ালটন ফ্রিজ নেই, যার দাম ১৪ লাখ ৪ হাজার টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করার পর পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই-বাছাই করে দেখতে পায়, গত ২৪ জানুয়ারি গুদাম থেকে সবশেষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। একটি টেম্পুতে করে কয়েকটি টিভি-ফ্রিজ নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে পায় পুলিশ। টেম্পুতে থাকা আরাফাতকে শনাক্ত করে প্রথমে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যে গ্রেফতার করা হয় পারভেজ ও সালাউদ্দিনকে। তিনটি টিভি ও ছয়টি ফ্রিজ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ চন্দ্র ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, গত ২৪ জানুয়ারি প্রথমে গুদামের ভেতর থেকে একটি ভ্যানে স্বাভাবিকভাবে ফ্রিজ-টিভি তুলে ডেলিভারি দেওয়া হয়। এরপর একটি টেম্পু এসে থাকে গুদামের সামনে। সেখানে কয়েকটি ফ্রিজ-টিভি তুলে দেওয়া হয়। তবে প্রতিষ্ঠানটি যতগুলো ফ্রিজ-টিভি না পাওয়ার অভিযোগ করেছে, ততগুলো সেদিন নেওয়া হয়নি। এর আগেও একইভাবে মালামাল নেওয়া হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’
জড়িতদের শনাক্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরাফাত টেম্পুতে বসা ছিল। সে মোটামুটি পরিচিত। এলাকায় নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা বলে পরিচয় দেয়। পারভেজ ও সালাউদ্দিন পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। আরাফাতের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির একজন স্টাফের মোবাইলে কথোপকথনের তথ্য আমরা পেয়েছি। ওই স্টাফ এখন পলাতক আছেন। তাকে ধরতে পারলে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে আমাদের ধারণা, ওই স্টাফসহ প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরের কারও কারও যোগসাজশে মালামালগুলো গুদাম থেকে বের করে নিয়ে যাবার ঘটনা ঘটেছে।’
এ ঘটনায় আরও অন্তত তিন থেকে চার জন জড়িত বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
