International Women’s Day 2021: প্রযুক্তি যত শক্তিশালী হচ্ছে, তাকে হাতিয়ার করে অপরাধ, প্রতারণা তত বাড়ছে। সাইবার ক্রাইমে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মহিলারা। কারণ, প্রতারকরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ধরেই নেন মহিলারা সমাজের চাপে এই নিয়ে মুখ খুলবেন না। তাই ব্যক্তিগত ছবি, তথ্য নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করা বা টাকা আদায় করা নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। অনেক মহিলা এই সমস্যায় পড়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন- এমন ঘটনাও রয়েছে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য বলছে, মাত্র ৬,০৩০টি সাইবার ক্রাইমের অভিযোগ মহিলারা করেছেন। কিন্তু ৭১ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর মধ্যে ২৫ কোটি কিন্তু মহিলা ব্যবহারকারী। এই ২৫ কোটির মধ্যে ৮০ শতাংশ সাইবার ক্রাইমের শিকার। কিন্তু ৬৩ শতাংশ মহিলা জানেনই না কী ভাবে সাইবার ক্রাইমের ঘটনায় অভিযোগ জানাতে হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্ষেত্রে মানসিক সমস্যা একটা বড় দিক। সমাজের চাপ, পরিবারের চাপ বা শুধুমাত্র মহিলা হওয়ার চাপেই কিন্তু অনেকে এই ধরনের ঘটনা লুকিয়ে, এড়িয়ে যান।
কিন্তু এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো দরকার। কী ভাবে নিজেদের সাইবার দুনিয়ায় সুরক্ষিত রাখা যায়, তা জানা দরকার-
ফটো নিয়ে কারসাজি: ফটো নিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ হয়ে থাকে। যেমন একজনের ফটো অন্যজনের শরীরে বসিয়ে তা দিয়ে প্রতারণা। কখনও নিষিদ্ধ ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেওয়া বা অসাধু কাজে লাগানো। এবার যত ছবি ফোনে তোলা হয়, তার প্রত্যেকটাই অটো ব্যাক-আপ নিয়ে নেয়। এখন কেউ যদি Google Drive বা icloud-এর অ্যাকসেস পেয়ে যায়, তাহলে কিন্তু এই ছবি ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই বার বার এই সব অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা দরকার। মোবাইল হ্যাক হয়েছে বা অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে, এমন মনে হলেই প্রশাসনের সাইবার ক্রাইম বিভাগে যোগাযোগ করা প্রয়োজন।
অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং: পাবলিক ওয়াইফাই বা নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার ফলে অনেক ধরনেরই সমস্যা হয়। যেমন অ্যাকাউন্ট হ্যাক। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট হ্যাক বা ই-মেলের তথ্য লুট। এছাড়াও এই ধরনের নেটওয়ার্কে লগ-ইন হয়ে কেউ যদি অনলাইন শপিং করে এবং তার যদি ব্যঙ্ক অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করা থাকে, সেক্ষেত্রেও কিন্তু সমস্যা হতে পারে।
এক্ষেত্রে মহিলারা সব চেয়ে বেশি টার্গেট হন, কারণ, ওই সমাজের ভয়ে তাঁরা সব সময়ে অভিযোগ জানান না। কিন্তু এর পরিণতি হতে পারে ভয়ঙ্কর। নিউড ইমেজ শেষে শুরু করে ছবি দিয়ে অন্যান্য অনেক কিছু করতে পারে প্রতারকরা। ফলে এই ধরনের পাবলিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এবং অনলাইন গেম, শপিং ইত্যাদির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
আর কী কী ভাবে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারেন মহিলারা-
দু’-ধাপে অথেন্টিকেশন
সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে দু’-ধাপের অথেন্টিকেশন করা ভালো, বিশেষ করে Gmail, Facebook ও Instagram অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে।
অ্যান্টি-ডেটা রিকভারি
মোবাইল ফোন বিক্রির ক্ষেত্রে অ্যান্টি-ডেটা রিকভারি করা দরকার। না হলে যিনি ফোনটি পরবর্তীকালে ব্যবহার করবেন, তিনি ডেটা রিস্টোর করতে পারবেন।
লক করা
মোবাইল ফোনে সব সময়ে লক রাখা প্রয়োজন, যাতে সহজে কেউ ব্যক্তিগত তথ্য খুঁজে পেতে না পারে।
শক্তিশালী পাসওয়ার্ড
সব অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেই পাসওয়ার্ড অত্যন্ত শক্তিশালী করা দরকার।
অ্যাকাউন্ট প্রাইভেসি
যে কোনও অ্যাকাউন্ট মহিলাদের ক্ষেত্রে পাবলিক থেকে প্রাইভেট করে রাখা উচিৎ। এতে তথ্য সুরক্ষিত থাকতে পারে।
ব্লক করে দেওয়া
অযাচিত মেসেজ বা ফোন এলে ব্লক করে দেওয়া উচিৎ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় সব তথ্য শেয়ার না করা
সোশ্যাল মিডিয়ায় আজকাল আমরা সব তথ্য শেয়ার করি। কিন্তু এমনটা উচিৎ নয়। এতে সমস্যা হতে পারে। যে কেউ তথ্য নিয়ে ব্যবহার করতে পারে।