#নয়াদিল্লি: সোশ্যাল মিডিয়া যে খুব একটা সুবিধার জায়গা নয়, তা নিয়ে অনেক সমীক্ষাই প্রতিনিয়ত প্রকাশিত হয়। বলা হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটানোর অভ্যাস আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। আর এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে অনলাইন ট্রোলিংয়ের কথা। বিষয়টি কী, তার আইনি প্রতিকার কী ভাবে সম্ভব, জানাচ্ছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রাচী মিশ্র (Prachi Mshra)।
অনলাইন ট্রোলিং কী?
যখন এক বা একাধিক ব্যক্তি নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির নামে অনলাইনে আপত্তিজনক কিছু পোস্ট করেন, তাঁকে অপদস্থ করেন, তখন সেই ঘটনাকে বলা হয় অনলাইন ট্রোলিং।
ট্রোল কাদের বলা হয়?
যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিরা অন্যকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপমানজনক পরিস্থিতির মুখে ফেলছেন, তাঁদের বলা হয় ট্রোল।
ট্রোলরা কাদের টার্গেট করে থাকে?
যে কাউকে এই ধরনের ব্যক্তিরা টার্গেট করে থাকেন। তবে সমাজের মতো অনলাইনেও সব চেয়ে বেশি ট্রোলিংয়ের শিকার হন মেয়েরা।
ট্রোলিং কোন দিক থেকে বিপজ্জনক?
অনেকে মিলে কাউকে অপদস্থ করলে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য বিঘ্নিত হয়। অনেক সময়ে ট্রোলরা যে বিষয়ের কোনও ভিত্তি নেই, তাও একজোটে চাপিয়ে দিতে চায়- এই গা-জোয়ারি ভয়ের বিষয় তো বটেই! পাশাপাশি, বিষয়টি অনলাইন থেকে অফলাইনে নেমে আসতে পারে, সেক্ষেত্রে শারীরিক লাঞ্ছনার সম্ভাবনা থাকে।
ট্রোলিং কোন দিক থেকে ক্ষতিকর?
ট্রোলরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্রমাগত কারও নাম নিয়ে কিছু পোস্ট করতে থাকলে অনেক সময়ে তা হ্যাশট্যাগে পরিণত হয়ে যায় এবং একটা সময়ে অনেকেই না জেনে-বুঝে সেই লাঞ্ছনাকারীদের দলে সামিল হয়ে যান। এভাবে দল বাড়তে থাকায় ভিকটিম কোণঠাসা হতে থাকেন।
ভিকটিম কোন আইনি পথ অবলম্বন করতে পারেন?
ক্রিমিনাল ইন্টিমিডেশন, সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট, ডিফেমেশন, ভয়ারিজম, অনলাইন স্টকিং- এই সবক’টা দিক থেকেই ভিকটিম আইনি সাহায্য পেতে পারেন। অবশ্য ইন্ডিয়ান পেনাল কোড, ১৮৬০-এ ট্রোলিং নিয়ে সরাসরি কিছু বলা নেই। তবে ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যাক্ট, ২০০০-এর সাহায্যে সাইবার ক্রাইম নিয়ে আইনি সাহায্য চাওয়া যায়, ট্রোলিং সাইবার ক্রাইমের মধ্যেই পড়ে।
আইনি পন্থায় ট্রোলদের শাস্তি কতটা সুনিশ্চিত?
আক্ষেপের বিষয়, অনেক ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ এবং আইনের অভাবে অপরাধীরা ছাড় পেয়ে যায়। তবে সরাসরি কোনও হুমকি, প্রাণহানি-মানহানি-ধর্ষণ সংক্রান্ত হলে আদালত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে পিছ-পা হয় না।
দেশে এখনও পর্যন্ত কোনও ট্রোল কি শাস্তি পেয়েছেন?
২০১৬ সালে বলিউডের এক গায়ক জনৈক সাংবাদিককে নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, তাঁর Twitter অ্যাকাউন্ট ব্যান করে দেওয়া হয়।
ট্রোলিং নিয়ে কেন আমাদের সচেতন হওয়া উচিৎ?
ট্রোলিং একটা আতঙ্কের আবহ সৃষ্টি করে। আমরা যদি এই নিয়ে প্রতিবাদের প্রাচীর গড়ে না তুলি, তাহলে অরাজকতা অনলাইন থেকে সমাজেও ছড়িয়ে পড়বে। তাই যথাসম্ভব এর প্রতিবাদ করা উচিৎ।
Prachi Mishra