আমাদের পৃথিবীতে কিছু মানুষ জ্ঞান অর্জনের জন্য সারাজীবন ব্যয় করে আবার কিছু মানুষ জন্মগ্রহণ করে “গড-গিফটেড” মেধা নিয়ে, যাকে আমরা প্রাকৃতিক ভাবে মেধাবী বলি।মাত্র নয় বছর বয়সি সুবর্ণ আইজ্যাক বারী তেমনি একজন বিষ্ময় বালক।এই অল্প বয়সেই সে পিএইচডি স্তরের পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, গনিত বিষয়ে তার বিস্ময়কর মেধা আর জ্ঞান এর জন্য অর্জন করেছে বেশ কিছু উপাধি।
সুবর্ণ আইজ্যাক বারী বিশ্বের সবচেয়ে কনিষ্ঠ অধ্যাপক। তিনি বাংলাদেশী বংশদ্ভূত নিওইয়ার্কের বাসিন্দা। তার বাবা রাশীদুল বারী এবং মা রেমন বারী। রশীদুল বারী নিওয়ার্কের স্থানীয় একটা কলেজের গনিতের শিক্ষক। সুবর্ণ তাদের কনিষ্ঠ সন্তান।
যে বয়সে আমরা কার্টুন দেখি বা ছড়া শিখি সেই দেড় বছর বয়সে সুবর্ণ রসায়নের পর্যায় সারণী তথা কেমিস্ট্রি পিরিয়ডিক টেবিল মুখস্থ করে ফেলে। দুই বছর বয়সে সে যুক্তরাষ্ট্রের কলেযে ইন্টারভিউ দেয় এবং ওয়াশিংটন ভিসিতে ভয়েস অফ আমেরিকার সাবরিনা চৌধুরী ডোনাকে সাক্ষাতকার প্রদান করে।
২০১৪ সালে মাত্র দুই বছর বয়সে নিউইয়র্কের সিটি কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. লিসা কোইকো সুবর্ণকে “আমাদের সময়ের আইনস্টাইন ” উপাধি দেন। ২০১৬ সালে গনিত ও বিজ্ঞানের সাফল্যের জন্য তাকে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিজ্ঞানী স্বীকৃতি দিয়ে চিঠি দেয়।
সুবর্ণ সেই বয়সেই নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থীর ‘গ্লোবাল চাইল্ড প্রোডিজি অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে।
৬ বছর বয়সে ২০১৬সালে, তিনি তার সমস্যা সমাধানের দক্ষতার জন্য হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন এবং নিউ ইয়র্ক সিটির প্রতিভাধর এবং প্রতিভাবান প্রোগ্রামে গৃহীত হয়েছিল।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রুইয়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. অনুর্ষি লোকুর দ্বারাও তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের ভিজিটিং অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেছিলেন। এনবিসি লিটল বিগ শটসের জন্য ওয়ার্নার ব্রোস স্টুডিওতে হলিউড কিংবদন্তি এবং অস্কার-মনোনীত মালিশা ম্যাকার্থিও তাঁর সাক্ষাত্কার নিয়েছিলেন। তিনি একমাত্র বাঙালি যিনি এই শোতে উপস্থিত হয়েছেন।
এছাড়াও ২০২০ সালে ১৭ অক্টোবর মাত্র ৮ বছর বয়সে সুবর্ণ নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নরের কাছ থেকে রাজ্যের সম্মান অর্জন করে। তিনি এই স্বীকৃতি প্রাপ্ত প্রথম বাংলাদেশী।
তিনি “দ্য লাভ” নামে একটি বই লিখেছেন যেখানে তিনি ধর্মীয় পার্থক্য এবং পক্ষপাতদুষ্টতা থেকে উদ্ভূত যে কুসংস্কার এবং বিদ্বেষকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছেন। সব ধর্মের প্রতি গ্রহণযোগ্যতা ও ভালবাসা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা তাঁর ছিল। এই বইটিও তার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের একটি সম্প্রসারণ।
সম্ভবত বিশ্বে যে একমাত্র বৃহত্তম সমস্যা তিনি অনুভব করেন তা হ‘ল ম্যাথ এবং সায়েন্সের অমীমাংসিত সমস্যা। ম্যাথের প্রতি যে উদ্বেগ অনুভূত হয়, বিজ্ঞানের ধারণাগুলি বোঝার জন্য অনীহা, বিশ্বে জীবনযাপনের জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজে না পাওয়ার অসহায়তা, অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের প্রতি ঘৃণা এবং আমাদের ভাগ্যের লড়াইয়ের চ্যালেঞ্জ।
তিনি বিশ্বাস করেন যে আমাদের মানব জাতিকে এক উচ্চতর স্থান নেওয়ার জন্য জীবনের পরিস্থিতি এমন কয়েকটি বিষয় রয়েছে যা কেবলমাত্র আমরা মানব জাতি হিসাবে যদি তা করতে চাই তবে সেগুলি মোকাবেলা করা যেতে পারে।
YSSE সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এখানে
উম্মে ফারজানা তমা
ইন্টার্ন এইচআর এন্ড এডমিন