পোশাক কারখানার সামান্য হেলপার থেকে নিজ প্রচেষ্টায় ছোট পরিসরের উদ্যোক্তা হয়েও কোনো ধরনের প্রণোদনা ছাড়াই কর্মীদের গত চার মাসের বেতন দিয়েছেন ছবি শিকদার। এতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁকে। ব্যাংকিং খাত থেকে কোনো ধরনের সহায়তা না পেয়ে বাড়তি সুদে ব্যক্তিবিশেষ থেকে ঋণ নিয়ে এ বেতন দিয়েছেন তিনি। তবুও একজন কর্মীকেও ছাঁটাই করেননি।
কিন্তু এভাবে কত দিন টানতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন ছবি শিকদার। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণের ঘোষণা দিয়েছে। ছবি শিকদারের প্রশ্ন, ‘নতুন উদ্যোক্তারা কী সরকারের প্রণোদনা পাবে না?’ আলাপকালে ছবি শিকদার বলেন, ‘আমাদের বন্ড নাই, এলসি নাই; সাবকন্ট্রাকে কাজ করি।
মার্চ মাসে দেশে করোনাভাইরাস হানা দেওয়ার পর থেকেই বলতে গেলে কাজ নেই। আমার ১১০ জন কর্মীর ওভারটাইম ছাড়াই মাসে বেতন দিতে হয় প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকা। পত্রিকা খুললেই দেখি সরকার ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় উদ্যোক্তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে।
গত এপ্রিল মাস থেকে বন্ধ কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার কর্মীদের বেতন সেই প্রণোদনা প্যাকেজ থেকেই দেওয়া হচ্ছে। অথচ নিবন্ধিত না হওয়ায় আমরা সেটা পাচ্ছি না।’ ব্যাংকে গিয়েও কোনো ধরনের সহায়তা না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে ছবি শিকদার বলেন, ‘ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের পাত্তা দিতে চায় না। বলে সরকার থেকে তারা কোনো সার্কুলার পায়নি। আমি দুটি বেসরকারি ব্যাংকে গিয়েছি কিন্তু সেভাবে কোনো সাড়া পাইনি।’
২০১৬ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে বড় কিছু করার স্বপ্ন থেকেই ২০১৬ সালে নিজের বাসার একটি কক্ষে জমানো টাকা দিয়ে খুব ছোট পরিসরে গড়ে তোলেন ‘সেন্স ফ্যাশন’ নামের পোশাক কারখানা। দুই বছর পর নগরীর নতুন চাক্তাই চালপট্টিতে পাঁচ হাজার বর্গফুটের বিশাল ফ্লোর ভাড়া নিয়ে ৬০টি মেশিন বসিয়ে নতুন উদ্যোমে শুরু করলেন সেন্স ফ্যাশনের কার্যক্রম।
সেখানে বর্তমানে কাজ করছেন ১১০ জন কর্মী। যার মধ্যে ৯৫ জনই নারী। এর স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর ‘আইপিডিসি-ডেইলি স্টার জয়িতা পুরস্কার’ পান। তবে করোনাভাইরাসের মতো মহামারি এসে নারী উদ্যোক্তা ছবি শিকদারের সেই পথচলাকে অনেকটাই রুখে দিয়েছে। তথ্যসূত্র: কালের কন্ঠ।