শনিবার , ৩ জুলাই ২০২১ | ২৭শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. ক্যারিয়ার
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. তরুণ উদ্যোক্তা
  7. ধর্ম
  8. নারী ও শিশু
  9. প্রবাস সংবাদ
  10. প্রযুক্তি
  11. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  12. বহি বিশ্ব
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. মতামত

‘বিশ্ববিদ্যালয় একটি কারখানা’

প্রতিবেদক
bdnewstimes
জুলাই ৩, ২০২১ ১:২৬ পূর্বাহ্ণ


 

 

Untitled23 1
প্রতিযোগীতায় শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হবার পর নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করেন আরিফ চৌধুরী শুভ। ছবিটি কালার্স এফএম এর ইউটিউব থেকে সংগ্রহ করা

ইউনাইটেড নিউজডেস্ক

আরিফ চৌধুরী শুভ একজন তরুণ উদ্যোক্তা। সমাজের নানা অসংগতি নিয়ে প্রায় লেখেন তিনি। লক্ষ্মীপুর জেলার কুশাখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম ফরাশগঞ্জের মেঠোপথ থেকে উঠে আসা এ তরুণ একঝাঁক তারুণ্যের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন জাতীয় পাঠাগার আন্দোলন নামে সংগঠন তৈরির মাধ্যমে। নিজ গ্রামে অবহেলিত সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবন মান পরিবতর্নের জন্য আরিফ শুভর চেষ্টা ও সাফল্য প্রশংসনীয়। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য গড়ে তুলেছেন বিনামূল্যের আলোকিত স্কুল। সারাদেশের প্রতিটি গ্রামে অন্তত একটি করে পাঠাগার গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন আরিফ শুভ। কাজের সাফল্যে হিসেবে এরই মধ্যে পেয়েছেন জাতীয় পাঠাগার আন্দোলনের সরকারী স্বীকৃতি। তার বাবা একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজ সংস্কারক ছিলেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্সে অধ্যায়নরত আরিফ শুভ স্বপ্ন দেখেন একটি পজিটিভ বাংলাদেশের।

Arif
বেস্ট পাবলিক স্পিকার নির্বাচিত হবার পর কালার্স এফএমের লাইভশোতে আমন্ত্রণ জানানো হয় বক্তাকে

২০১৫ সালে বেসরকারি উচ্চ শিক্ষায় ভ্যাট আন্দোলনের উদ্যোক্তা ও অন্যতম সংগঠক আরিফ চৌধুরী শুভ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে শুভ শ্রেষ্ঠ পাবলিক স্পিকার(বক্তা) নির্বাচিত হয়েছেন। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর সাথে প্রতিযোগীতা করে শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি।

তিনি লেখেন, হ্যাঁ, আমইি শ্রেষ্ঠ বক্তা নর্বিাচতি হয়েছি। দিনটি ছিল আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনরে শেষ দিন এবং পড়ন্ত বিকেলের গোধুলীলগ্ন। জীবনে কত অপূর্ণতা থাকে তাই না? হাজারো অপূর্ণতার মাঝে ক্লেমনই আমাকে শুনালো শেষ শুভ সংবাদ। গত বছরের ৭ নভেম্বর ক্লেমন কালারস এফএম ১০১.৬- ২০১৬; কে হতে চাও ক্যাম্পাস স্টার? প্রতিযোগীতায় আমি ছিলাম সামান্য একজন প্রতিযোগী মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বহু প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেছি, কিন্তু আমার আত্মবিশ্বাসের সাথে বার বারই প্রতারণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যে বিতর্কে আমি জিতে যাই, সে বিতর্কেও আমাকে হারতে হয়েছে সর্বনিম্ন স্কোর নিয়ে। হারই যেন আমার প্রতিযোগীতার একমাত্র ফলাফল।

আমি হতাশ হতাম না, কারণ আমি জানতাম আমি হারিনি, আমাকে হারিয়ে দিয়েছে একটি মহল। কিন্তু এভাবে কতদিন? ক্লেমন আমার সম্মান রক্ষা করেছে। ক্লেমন আমাকে শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে নির্বাচিত করেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবাই আমাকে সব সময় বেস্ট বলতো, ক্লেমন তার স্বীকৃতি দিলো প্রতিযোগীতার মঞ্চে। কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে পরিস্থিতি একেবারে পাল্টে গেল। ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে গেল। আমি তখন বেইলী রোডে মন খারাপ করে বসে ছিলাম আরেকটি হারের খবর শুনতে হবে বলে। কিন্তু বিচারকরা কেউ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিলেন না বলে এই প্রথম জিতে গেলাম আমি। দেখলাম আমার চোখে আনন্দের অশ্রু আর মঞ্চের সামনে সবাই হাত তালি দিচ্ছেন আমাকে অভিনন্দন জানিয়ে। চারদিক থেকে অভিনন্দনের খুদে বার্তা আসতে লাগলো। মুহুর্তে সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে খবরটি ছড়িয়ে গেল। কিন্তু হতাশ হতে দেখেছি তাদের, যারা এতদিন বিজয়ী হতেন বিশেষ কায়দায়। হারের তালিকায় এই প্রথম তাদের নাম উঠলো। তারা আমাকে অভিনন্দন জানাননি উল্টো প্রশ্ন রেখেছেন, আমি কি আগে থেকে বিচারকদের চিনতাম?

প্রতিযোগীতার মঞ্চে যে বক্তব্য আরিফ শুভকে শ্রেষ্ঠ বক্তা হিসেবে বিজয়ী করেছে, সেটি আমাদের পাঠকদের জন্য সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো।

মানুষের জন্ম সুন্দর, কিন্তু জন্মের পর মানুষ বেড়ে উঠে যে স্বপ্নের ভেতর দিয়ে; সেটি সুন্দর নাও হতে পারে। তবুও মানুষ নিরন্তর স্বপ্ন দেখে জীবনকে নিয়ে। ছোটবেলা থেকে আমি স্বপ্ন দেখতাম পাখির মতো উড়ে যেখানে ইচ্ছে চলে যাবো, কিন্তু একটু বড় হবার পরে বুঝতে পারলাম মানব সন্তানের এমন স্বপ্ন দেখতে নেই। কারণ মানুষ আর পাখির পার্থক্য সৃষ্টিতেই স্পষ্ট। যখন প্রাথমিকে পড়ি, তখন বাবা-মা বড় হতে বলেছেন, কিন্তু কত বড় হতে হবে সেটি বলেনি। আমি বয়সে বড় হবার কথা বলছি না। ২০০০ সালে প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষায় আমি যখন পুরো বোর্ডে প্রথম হয়ে যাই, তখন আমাকে দেখতে মানুষের ভীড় আমাকে ভাবিয়েছে জীবনে বড় হবার উটকো ঝামেলা কতটুকু। আমি কারো কোন ক্ষতি না করেই অনেকের হিংসের কারণ হয়ে গেলাম তখন থেকে। আমার বৃত্তি পাওয়াতে আমার অনেক সহপাঠিকেও তাদের পিতা-মাতার হাতে নিরার্থক মার খেতে হয়েছে। এই প্রথম চিন্তা করলাম, একটা শিশুর বড় হবার এমন ভাবনা মোটেও ঠিক নয়। তাহলে সে আমার মতো শৈশব হারাবে বড় হবার মোহে। তাকে সহপাঠিরা প্রতিনিয়ত হিংসা করবে। নিরানন্দ জীবন তাকে মেনে নিতে হবে ইচ্ছা অনিইচ্ছার বিরুদ্ধে। এভাবে বড় হতে হতে একদিন সে আমার মতো কোন এক প্রতিযোগীতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে ব্যর্থতার গল্প শুনিয়ে বিচারকদের সময় নষ্ট করে। এই যেমন আমি এখন তাই করছি। নিশ্চয় আপনারা বিরক্ত হচ্ছেন আমাকে শুনে।

আমি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের শেষ মাসের শেষ দিনের শিক্ষার্থী। প্রত্যাশা করতে করতেই বেলা অস্তে চলে গেল, কিন্তু হৃদয়টা ভীষণ ভার হয়ে আছে। আজকের শেষ সূর্যটা গোধুলীলগ্নে যাওয়ার আগে আমাকে একটা স্বপ্নের কথা বলেছে। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি প্রাক্তণ। তাই বৈধ সময়ে আমার স্বপ্নের কথাটি বলতে পারাটাই আমার স্বপ্নের প্রথম সফলতা বলে আমি মনে করি।

উচ্চ শিক্ষা শেষে সফলতার গল্প শুনতে শুনতে আপনারা এই মঞ্চের সামনে পুরো সপ্তাহ কাটিয়ে দিলেন। শেষ প্রতিযোগী হিসেবে আমি না হয় ভিন্ন একটি গল্প শুনিয়ে গেলাম। অনেক ভেবেচিন্তে আমি ঠিক করেছি পড়াশুনা শেষ করে যদি কখনো সুযোগ হয়, আমি একটি কারখানা দেব। আমার স্বপ্নরে কারখানাটি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কারখানা হতে হবে ঠিক এমন না, কিন্তু আজ আমি যে কারখানার মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি, সেই কারখানার চেয়ে লক্ষগুণ উত্তম হবে বিশ্বাস করি। আমার মতে, বিশ্ববিদ্যালয় একটি কারখানা। আমার মতো যারা বাবা মায়রে রক্তবেচা দামে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হবার স্বপ্ন দেখে, তাদেরকে আমার কারখানায় অগ্রিম আমন্ত্রণ জানাই। মঞ্চের সামনে এমন কেউ থাকলে আমার সেই কারখানা গড়ার স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসতে পারনে।

আমার কারখানার কোন শিক্ষার্থীকে মাত্র ৫ হাজার টাকা টিউশান ফি মওকুফের জন্যে মাসের পর মাস প্রেসিডেন্ট, উপাচার্য অফিসে ঘুরে ঘুরে র্ব্যথ হয়ে খালি হাতে ফিরতে হবে না। চার বছর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবন শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে অন্তত এতটুকু সহানুভূতি একজন ছাত্র হিসেবে আমি পাইনি। আমি সবার চোখে তাকিয়েছি। কারো চোখে আমি তখন আর ছাত্র নই, সবাই আমাকে এটিএম বুথ ভেবেছেন। আমার মতো পিতৃহীন মেঠোপথের ছাত্রদের জন্য কারো মায়া নেই। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি রক্তে ধারণ করেছি। দিন-রাত বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে কত কাজ করেছি। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যতটুকু দায়িত্ব, মনে হয় তার সবই করেছি ভালোবেসে। নিজে না খেয়ে সেই টাকা খরচ করে শিক্ষার্থীদের সাহিত্য চর্চার জন্য একটি সাহিত্য ক্লাব করে দিয়েছি। সকালে একটি রুটি ও দিনে একবলো খাবার খেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেছি। সার্টিফিকেট তুলতে মাত্র ৫ হাজার টাকা কম ছিল এবং মওকুফ চেয়েছি কিন্তু পাইনি। মাত্র ২৩ হাজার টাকার টিউশান ফির জন্যে আমাদের পাকা ধানরে জমি বন্ধক দিতে হয়েছে। মায়ের গহনা বন্ধক দিয়ে গ্র্যাজুয়েশনের সার্টিফিকেট তুলেছি কর্তৃপক্ষের দেখানো একটি চাকুররি আশায়। চাকুরীর জন্যে ঘুরতে ঘুরতে জুতা ক্ষয় করেছি ভিসি, চেয়ারম্যান, ট্রাস্টিবোর্ডের ধারে ধারে। সবাই আমাকে স্বপ্ন দেখিয়েছে মাত্র, কিন্তু আমার প্রয়োজনের সময় ফিরিয়ে দিয়েছে শুন্য হাতে। আমি জীবনের কাছে আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আমি এমন একটি কারখানা দিতে চাই, যেই কারখানার শিক্ষার্থীরা আমার মতো বাবা মায়রে দুচিন্তার কারণ না হয়ে তাঁদের চোখে স্বপ্ন হবে। আমার কারখানা থেকে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের জমিতে পাকা ধান ঢেউ খেলবে। তাদের মনে থাকবে দেশ গড়ার সুবর্ণ স্বপ্ন। আমি সব সময় একটা কথা বলি, একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর র্গজনে মাটি কেঁপে উঠবে। যেখানে অন্যায়, সেখানে সে প্রতিবাদী হবে। ২০১৫ সালে বেসরকারী উচ্চ শিক্ষায় কর বসানোর প্রতিবাদে আমি সবার আগে রাস্তায় নেমেছি। ভ্যাট আন্দোলনের সময় আমি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সবার আগে এগিয়ে এসেছি বলে আমাকে বহুবার মারখেতে হয়েছে বখাটে ছাত্রদের হাতে। এই বখাটে শিক্ষার্থীদের সব সময় সেল্টার দিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস। এখানকার প্রক্টররা ব্রিটিশদের মতো আচরণ করেছে শিক্ষার্থীদের সাথে। তারা আমাকে সব সময় মঞ্চের বাহিরে রাখতে চেয়েছে নিজেদের স্বার্থে। তারা সব সময় সফল হয়েছে এই চৌহদ্দির ভেতরে।

আজ আমি আপনাদের একটা কথা বলতে চাই, এই মঞ্চে আমি এই প্রথম নই, কিন্তু এই প্রথম আমি এই মঞ্চে প্রতিযোগীতায় দাঁড়িয়েছি। আমি কাউকে প্রতিযোগী নয়, সহযোগী ও বন্ধু মনে করি। প্রতিযোগীতার মঞ্চকে আমি ভয় পাই। মঞ্চ সবাইকে গ্রহণ করে না। যাদের গ্রহণ করে, তারা হন মঞ্চের অভিনেতা। দর্শক যাকে সার্পোট দেয়, সে জীবনে অনকে দূরে এগিয়ে যায়। আমিও এগিয়ে যেতে চাই আপনাদের দোআয়। তবে সেটা কত দূর, তা আজ আপনারাই বলে দিবেন ফলাফলের মাধ্যমে। তবে আমি সামনে যেতে চাই। এটাই বাস্তব সত্য।

আমি আবারো বলছি, বিশ্ববিদ্যালয় একটি কারখানা। এই মঞ্চটি হলো এই কারখানার শ্রেষ্ঠ মঞ্চ। যে মঞ্চের সামনে আপনারা বসে আছনে, সেটি হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শব্দটির মঞ্চ। এই কারখানায় কোন পণ্য উৎপন্ন হয় না। এটি হলো মানুষ গড়ার কারখানা। পৃথিবীর বড় বড় সব মানবিক সেবা সঙ্গ সভ্যতা সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কারখানা থেকে। যিনি এই কারখানাটি দিয়েছেন, আমি তাঁকে সেলুট জানাই। জীবন তাকে অর্থনৈতিক সফলতা দিয়েছে এই কারখানার বদৌলতে।

Untitled1234 1
ট্যালেন্ট হান্ট প্রতিযোগীতার মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন আরিফ চৌধুরী শুভ

আরেকটি কথা মনে রাখবেন, জীবন ততটুকু সুন্দর যতটুকু আপনি জীবনকে দিয়েছেন। আমার কাছে জীবন ভোরের শিশিরের মতো যেমন সুন্দর, তেমনি উত্তাল সাগরে ভাসমান তরীর টিকে থাকার মতো চ্যালেঞ্জ। ডুবে যেতে যেতে আমি তীরে এসে দাঁড়িয়েছি মাত্র। এখন পর্যন্ত বাস্তবে চ্যালেঞ্জ ছাড়া কিছু্ই পাইনি। জন্ম থেকে দেখেছি শুধু অভাব অনটনের একান্নবর্তী সংসার, আর দিন শেষে আমাদের নিয়ে বাবা মায়ের নানা দু:চিন্তা। সাত-ভাইবোনের সংসারে আন্দোলনই হয়ে উঠে আমাদের প্রত্যেকের জীবন। তবুও আমরা কেউ পড়াশুনা ছাড়িনি। শত অভাব অনটনের মাঝেও নিজেকে বিরত রাখিনি বই পড়া থেকে। একটা বই পড়তে হলে আমাকে সাইকেল চালিয়ে যেতে হয়েছে ১৬ মাইল দূরের জেলা শহরের সরকারি গ্রন্থাগারে। এখন আমি নিজেই নিজ গ্রামের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই পড়ার জন্য গড়ে তুলেছি গণ পাঠাগার। এখন ঢাকায় থাকি বলে সেই পাঠাগার থেকে আমার দূরত্ব বেড়েছে সত্য, কিন্তু বইয়ের সাথে যে আত্মীক সম্পর্ক গড়ে ওঠেছে আমার ও আমাদের পরিবারের, সেটি কোনদিন কমবে না। এই সম্পর্ক একদিন এই অস্ত যাওয়া সূর্যের মতো আমাকে নিয়ে যাবে জীবন পাটে। সেদিন না হয় সফলতার গল্প শুনাবো কতটুকু বাস্তব আমি কতটুকু রঙিণ। আজ না হয় ব্যর্থতার গল্প শুনিয়ে মনখারাপের মধ্য দিয়ে বিদায় নিলাম। ভুলগুলোর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। সবাই ভালো থাকবেন।

 

Print Friendly, PDF & Email



Source link

সর্বশেষ - বিনোদন