কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, বুয়েটের ছাত্র ফারদিন নূর পরশ আত্মহত্যা করেছেন। এ বিষয়ে পরে ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে।
গোয়েন্দা মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহিদুর রহমান রিপন বলেন, আমরা ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেখেছি। সার্বিক দিক দেখে মনে হয়েছে, এটি আত্মহত্যা।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং অগ্রগতি পাওয়া গেছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রামপুরা থেকে নিখোঁজের তিন দিন পর সিদ্ধিরগঞ্জ বনানী ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
ফারদিন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি বুয়েট ডিবেটিং ক্লাবের যুগ্ম-সম্পাদক ছিলেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিলেন ফারদিন।
জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর রাজধানীর ডেমরা থেকে নিখোঁজ হন বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন। পরদিন তার বাবা নূরউদ্দিন রানা রাজধানীর রামপুরা থানায় একটি জিডি করেন। পরে সন্তানের খোঁজ চেয়ে ফেসবুকে একটি পোস্টও করেন নূরউদ্দিন রানা। সেখানে তিনি বলেন, ফারদিন বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। শুক্রবার রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে তাকে শেষবার রামপুরা ব্রিজ এলাকায় দেখা যায়। ওই দিন রাত পৌনে ১১ থেকে ১১টার মধ্যে ফারদিন সেখানে অবস্থান করছিলেন। এরপর তার বুয়েটের হল কিংবা বাসায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু সে ফেরেনি।
ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দিন বিজনেস পত্রিকা ‘দ্য রিভারাইন’–এর সম্পাদক ও প্রকাশক। ফারদিনের মা ফারহানা ইয়াসমিন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলায়।
কাজী নূর উদ্দিন বলেন, ‘গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার পর থেকে ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তার সর্বশেষ অবস্থান ছিল রামপুরা থানা এলাকায়। কোথাও তার খোঁজ না পেয়ে ওই থানায় শনিবার একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নৌ পুলিশের ফোন পেয়ে নারায়ণগঞ্জে গিয়ে ফারদিনের লাশ শনাক্ত করি।’
মেধাবী ফারদিন এসএসসি ও এইচএসসিতে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন। ফারদিন পড়ালেখার পাশাপাশি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজে জড়িত ছিলেন। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আসা-যাওয়া ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন।’
আরও পড়ুন: