#আরিজোনা: কাছাকাছি যে সব ম্যাকডোনাল্ডসের (McDonald’s) আউটলেট দেখা যাবে, তার সবক’টারই লোগোর রঙ উজ্জ্বল হলুদ, প্রায় সোনালি রঙের কাছাকাছি বললে খুব একটা ভুল হয় না। আদতে তো এই দোকান মার্কিন সংস্কৃতির ভাজাভুজির জন্য বিখ্যাত, সোনালি রঙের লোগোতে যেন সেই ব্যাপারটাই আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু আরিজোনার এক শহরের ম্যাকডোনাল্ডসের এক রেস্তোরাঁর লোগোর রঙ তুঁতে নীল, যার টানে, যার পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার জন্য দূর দূর থেকে আসেন ম্যাক-লাভাররা!
আসলে এই রঙবদলের কারণ নেহাতই প্রশাসনিক। আরিজোনার এই শহরকে ঘিরে রেখেছে সোনালি মরুভূমি। সেই মরুভূমির প্রেক্ষাপটে ম্যাকডোনাল্ডসের লোগোর রঙ বেশি জ্বলজ্বলে হয়ে উঠতে পারে, তা ছাপিয়ে যেতে পারে বালির সৌন্দর্যের আবেদন, এমনটাই মনে হয়েছিল প্রশাসনের। ফলে এই দোকান যখন তৈরি হয়, তখন তারা এর বিপক্ষে স্থানীয় আইন প্রয়োগ করে। আরিজোনার এই স্থানীয় আইন অনুসারে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ধ্রুপদী কোনও স্থাপত্যের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে, এমন পদক্ষেপ দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিবেচনা করা হয়।
আইনের মুখে পড়ে খুব স্বাভাবিক ভাবেই অসহায় বোধ করে ম্যাকডোনাল্ডস। এর পর তাদের বেশ কয়েক দফা বৈঠক চলে প্রশাসনের সঙ্গে। সব শেষে সলা-পরামর্শের পর তুঁতে নীল রঙটা বেছে নেওয়া হয়। মধ্যস্থতা হয়ে যাওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচে বিখ্যাত এই ফুড জায়ান্ট। তবে আরিজোনার এই শহরের প্রশাসনের পক্ষে ব্যাপারটা সেই অস্বস্তিকরই থেকে যায়। ম্যাকের খাবার ভালোবাসান যাঁরা, তাঁরা স্রেফ এই তুঁতে নীল রঙের লোগোর জন্যই ভিড় জমাতে থাকেন রেস্তোরাঁয়। খাবার তো সব জায়গায় একই রকম সরবরাহ করে থাকে ম্যাকডোনাল্ডস, কিন্তু এমন আলাদা লোগো তো আর সব আউটলেটে দেখা যায় না। ফলে খয়েরি রঙের দেওয়ালে তুঁতে নীল রঙের ওই ম্যাকডোনাল্ডসের লোগেই হয়ে দাঁড়িয়েছে আপাতত আরিজোনার ওই শহরের প্রধান পর্যটক আকর্ষণ; মরুভূমির টান যে ভাবেই দেখা যাক না কেন হেরে গিয়েছে তার কাছে!
শহরের নাম?
সেডোনা! প্রবাদ বলে যে ঈশ্বর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন তৈরি করলেও তিনি বাস করেন সেডোনায়, তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য! সেই সৌন্দর্য, কার্যত পরাভূত হল পুঁজিবাদের হাতে!