ইয়ুথ স্কুল ফর সোশ্যাল এন্ট্রেপ্রেনার্স আয়োজিত বিহাইন্ড দা জার্নি এর একটি স্পেশাল এপিসোডে গতকাল ৩১ মে উপস্থিত ছিলেন Black Brains এর ফাউন্ডার ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম আব্দুল্লাহ আল মুসতাইন এবং কো-ফাউন্ডার ও ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মুনতাসির উল হামিদ। অনুষ্ঠানজুড়ে উপস্থাপনা করেছেন ওয়াইএসএসই এর অপারেশন ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট এর ইন্টার্ন মাইশা রহমান চৈতি।
ওয়াইএসএসই একটি সামাজিক সংস্থা যা দেশের তরুণ তরুণীদের যাবতীয় উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তাদের কাজের ওপর লক্ষ্য রেখেই ওয়াইএসএসই এর এই যাত্রা শুরু। ব্ল্যাক ব্রেইনস এর মধ্যে অন্যতম।
ব্ল্যাক ব্রেইনস:
ব্ল্যাক ব্রেইনস একটি স্টুডেন্ট প্লাটফর্ম যা শিক্ষার্থীদের সাহায্য করছে ভবিষ্যৎ কর্পোরেট জগতের জন্য কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে। ব্ল্যাক ব্রেইনস শুরু করার পেছনের কাহিনী বলতে গেলে ফাউন্ডার আল মুসতাইন বলেন, লকডাউনে বসে তারা দুজনেই কিছু একটা করতে চেয়েছিলেন সমাজের জন্য। প্লান অনেক আগের ছিল কিন্তু কার্যকর করা হয়নি। সেই থেকেই ব্ল্যাক ব্রেইনের যাত্রা। বাংলাদেশে ভার্চুয়াল ইন্টার্নশিপের বেহাল অবস্থার কথাও উল্লেখ করেছেন এই অতিথি। এছাড়াও, যেকোন ধরনের কোর্স বা কর্পোরেট গ্রুমিং সেশন গুলোতে এনরোল করার মুল্য একজন শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বেশী হয়ে যায় বলেও জানান তিনি। সেই থেকেই ব্ল্যাক ব্রেইনসের ধারণা আসে।
ব্ল্যাক ব্রেইনস খোলার পেছনে আরেকটি কারণও উল্লেখ করে থাকেন এই অতিথি। সমাজের প্রতিটি স্তরে স্তরে আজ প্রতিযোগিতা। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থী কে কোনদিনও এসব ব্যাপারে আগে থেকে বলা হয় না। যার ফলে এই বয়সটা অনেক বেশী অবহেলিত। এ বয়সের যেকোন শিক্ষার্থীর সঠিক গ্রুমিং প্রয়োজন যা ব্ল্যাক ব্রেইনস দিচ্ছে।
নামের পেছনের গল্প:
“ব্ল্যাক ব্রেইনস” নামটির ধারণা কিভাবে আসে সে ব্যাপারেও খুব মজাদার একটি গল্প শোনান দুজন অতিথি। কো-ফাউন্ডার মুনতাসির উল হামিদ জানান, ব্ল্যাক ব্রেইনের নামটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রাফিটি থেকে অনুপ্রাণিত। যেখানে লেখা- “প্রতিবাদে প্রতিবাদে ভাঙ্গো, মগজের curfew“। এখানে মগজের কারফিউ বলতে একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন মগজ এর কথা বলা হয়েছে যা এখনো আলো দেখেনি। অতিথির ভাষ্যমতে, ব্ল্যাক ব্রেইনের কার্যক্রমের মূল উদ্দেশ্য এটিই যে সমাজের আরেকজন মানুষের মুখের হাসির পেছনে যদি আপনার হাত থাকে তাহলে আপনিই “Black Brains”।
বাধা:
ব্ল্যাক ব্রেইনস স্থাপনের পেছনে কি কি বাধা অতিক্রম করেছেন তারা সে ব্যাপারে আল মুসতাইন উল্লেখ করে বলেন যে, সব ভালো কিছু শুরুর পেছনেই একটি struggle এর গল্প থাকে। হার মানা যাবে না কোনভাবেই। তাদের বাধা বলতে প্রথমে কেউ ই বিশ্বাস করছিলো না এই ধারণার ওপর শুধুমাত্র পরিবার এবং বন্ধুরা বাদে। এছাড়াও, শুরুর দিকে নিজেদেরও গ্রুমিং এর প্রয়োজন ছিলো কিন্তু এখন ধীরে ধীরে সফল হচ্ছেন ওনারা বলেও জানান।
কার্যক্রম:
অনুষ্ঠানজুড়ে ব্ল্যাক ব্রেইনের নানারকম কার্যক্রম সম্পর্কেও কথা বলেন অতিথিরা। যার মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক ব্রেইনের কর্পোরেট সিমিউলেশন, “টর্চ” নামের একটি ম্যাগাজিনের বের হওয়ার সম্ভাব্য সময় এবং IDEATION প্রতিযোগিতা।
IDEATION:
ওয়াইএসএসই সহ আরো ৭টি সংস্থার সাহায্যে ব্ল্যাক ব্রেইনস একটি আইডিয়া প্রতিযোগিতা আরম্ভ করতে যাচ্ছে যা IDEATION নামে পরিচিত হবে। এখানে নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের নতুন ধারণা কে পরোখ করা হবে এবং বাদ হয়ে যাওয়া উদ্যোক্তাদের নানানভাবে গ্রুমিং করা হবে। প্রতিযোগিতাজুড়ে প্রতিটি সেক্টরের বিচারক হিসেবে এক্সপার্ট দের আনা হবে এবং রেজিস্ট্রেশন ফি হবে শুধুমাত্র ৭১ টাকা। যা পরবর্তিতে দান করে দেয়া হবে “মুক্ততরী” নামের একটি ফাউন্ডেশনে।
Rapid Fire রাউন্ড:
অনুষ্ঠানের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল শেষের দিকের র্যাপিড ফায়ার রাউন্ড। যেখানে অতিথি আল মুসতাইন অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং কিছু প্রশ্নের ছটফট জবাব দিয়ে থাকেন। যার মধ্যে নিজের ১৮ বছর বয়সী সত্ত্বাকে উপদেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবগুলিতে যোগদানের ব্যাপারেও মূল্যবান উপদেশ প্রদান করেন অতিথি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
ভবিষ্যৎ এ ব্ল্যাক ব্রেইনস কে কোথায় দেখতে চান এ প্রশ্নের উত্তরে আল মুসতাইন জানান, ব্ল্যাক ব্রেইনস কে নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই তাদের। তারা এগিয়ে যেতে চান, সমাজের জন্য কাজ করতে চান। সমাজের প্রতি নিজস্ব দায়বদ্ধতা থেকেই তিনি, মুনতাসির উল হামিদ এবং তাদের ৩৪ জনের দলটি কাজ করে যাচ্ছে দিনরাত।
উপদেশ:
ওয়াইএসএসই থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অতিথি জানান দর্শকদের প্রতি উপদেশ হিসেবে তিনি সবাইকে এই করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সুরক্ষিত থাকতে বলবেন।
পরিশেষে, ওয়াইএসএসই পরিবার ব্ল্যাক ব্রেইনস টিমকে সাধুবাদ জানায় এবং আশা করে তাদের একটি সাফল্যমণ্ডিত ভবিষৎ এর জন্য।
আমাদের এরকম আরো ব্লগ পড়তে ক্লিক করুন এখানে
সাবিকুন্নাহার আফরা
ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
YSSE