করপোরেট সেক্টরটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই সেক্টরে ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করতে চান, এরকম তরুণের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। যারা এ সেক্টরে কাজ করতে চান, তাদের কীভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে , কি কি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছেন এ সেক্টরের অভিজ্ঞজন। পাশাপাশি তিনি শেয়ার করেছেন নিজের অভিজ্ঞতা চ্যালেঞ্জ আর কর্মপদ্ধতি।
করপোরেট সেক্টরের যাবতীয় বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন নেসলে বাংলাদেশের ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ আবিদ মাহমুদ। আবিদ মাহমুদ। সৃজনশীল ও উদ্যমী একজন মানুষ। দীর্ঘ দিন ধরে নেসলে বাংলাদেশে কাজ করছেন। সেখানে তিনি একজন ব্র্যান্ড এক্সিকিউটিভ হিসেবে কাজ করছেন। তরুণ বয়সেই তিনি হয়েছেন নেসলে বাংলাদেশের নুডলস ক্যাটেগরির অভিভাবক। বিপণন নিয়ে তার কাজ অনুকরণীয়।
করপোরেটের মার্কেটিং পেশায় যারা আসতে চান, সেই নতুনদের জন্য তার পরামর্শ হচ্ছে, কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। থাকতে হবে শেখার মানসিকতাও। যারা ব্র্যান্ড সেক্টরে কাজ করেন, বিপণন নিয়ে বেশি ভাবতে হয় তাদের। আবিদ ও তার টিমও এর ব্যতিক্রম নয়। তাদের চিন্তায়-মগজে কেবলই প্রোডাক্ট ব্র্যাণ্ডিং।
গত বছর পর্যায়ক্রমে ক্রেতা এবং ভোক্তাভিত্তিক বিশেষ কিছু কার্যক্রম করেন আবিদ ও তার টিম। সে সময় বৈচিত্র্যময় এবং অসাধারণ কিছু কাজ করেন তারা। বেশকিছু নতুন উদ্যোগ অনেক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ক্রেতাদের কাছে। এই কার্যক্রমগুলো ক্রেতাদের মধ্যে সাড়া ফেলে এবং ম্যাগি নুডলসের বিজনেসে এনে দেয় সফলতা।
আবিদ এবং তার টিমের হাত ধরে ম্যাগি নুডলসের বিশ্বব্যাপী যে জনপ্রিয়তা, তা বাংলাদেশেও বিশেষ ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের কাছ থেকে পর পর কয়েক বছর শ্রেষ্ঠ ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি পায় ম্যাগি নুডলস। ২০১৮ সালে টানা নবমবার স্ন্যাকস ক্যাটাগরিতে ম্যাগি পায় শ্রেষ্ঠ ব্র্যান্ডের পুরস্কার। এই অর্জনে আবিদ ও তার টিমের রয়েছে বিশেষ অবদান।
বর্তমানে আবিদের কাছে ইন্টার্নশিপ করছেন একজন। নিয়মিতই তার অধীনে নতুনরা ইন্টার্নশিপ করে থাকেন। যারা ইন্টার্নশিপ করতে চান, তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হয়। তারপর ইন্টাভিউতে উত্তীর্ণ হলে কিছু প্রজেক্ট দেওয়া হয়। যেমন, এবার যিনি কাজ করছেন আবিদের অধীনে তিনি আসন্ন নতুন প্রডাক্ট ডেভেলপমেন্ট এবং বিভিন্ন ক্যাম্পেইন নিয়ে কাজ করছেন।
আবিদ পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে। এরপর মার্কেটিংয়ে এমবিএ শেষ করেন। চাকরি শুরু প্রথম দিন থেকেই বিপণন বিষয়ে কাজ করেছেন তিনি।
ইভেন্ট আর অ্যাক্টিভেশনে কীভাবে বৈচিত্র্য আনা যায়, সে বিষয়ে ব্র্যান্ড ডিপার্টমেন্টকে ভাবতে হয়। আবিদ এই ইভেন্ট আর অ্যাক্টিভেশনের কাজে নানারকম চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন। শুধু টিভিসির ওপর নির্ভর না করে, নানারকম আইডিয়া তৈরি করেছেন। আইডিয়াগুলো নিজের টিম আর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়েছেন। সময়মতো সঠিকভাবে প্রয়োগ করেছেন তার আইডিয়া।
আবিদ বিশ্বাস করেন, একজন সফল বিপণনকর্মীর সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো যে কোনো ব্র্যান্ড কমিউনিকেশনে আসল মেসেজটা অত্যন্ত সহজ এবং সাবলীলভাবে ভোক্তার কাছে উপস্থাপন করা। তবে একটি পণ্য ভোক্তার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। আসে সফলতা।
নেসলের সহকর্মীদের কাছে আবিদ ভীষণ জনপ্রিয়। সাইকোলজিক্যাল কো-অর্ডিনেশনে আবিদ বেশ পারদর্শী। সবসময় শেখার মনমানসিকতা নিয়ে থাকেন ফলে নতুন সমস্যার চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করেন সানন্দে। সদা উদ্যমী ও প্রাণোচ্ছল এই মানুষটি সামাজিক দায়িত্ব পালনেও এগিয়ে যান। পরিবারে কাছেও তিনি আদর্শ মানুষ। মোটকথা বলা যায়, তিনি একজন সৃজনশীল উদ্যমী এবং অনুকরণীয় একজন মানুষ।
বিপণনের ক্ষেত্রে পণ্য ক্রেতার কাছে পৌঁছানো জরুরি। ক্রেতার মধ্যে পণ্য সম্পর্কে ভালো মনোভাব গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। এই জন্য বিপণন কর্মকর্তারা বিভিন্ন মিডিয়ার সহযোগিতা নিয়ে থাকেন। মিডিয়ার কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নিয়ে করতে থাকে মিডিয়া মার্কেটিং। মিডিয়া মার্কেটিংযের ক্ষেত্রেও তিনি বিশেষ অবদান রেখেছেন।
নুডলস ক্যাটেগরিটি সবসময় অনেক প্রতিযোগিতাপূর্ণ। ক্রেতারা সবসময়ই চান কিছু নতুনত্ব আর বৈচিত্র্যময়তা। যার ফলে আবিদ ও তার টিম নিরলসভাবে কাজ করে থাকেন নিত্য-নতুন প্রডাক্ট বাজারে নিয়ে আসার। এই সব কারণে ম্যাগি নুডলসের রয়েছে শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয়তা এবং পরিচিতি।