জয়নাল আবেদীন: মুনা চৌধুরী কক্সবাজারের রামু উপজেলার একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। তার জীবন সংগ্রামের গল্প বাংলাদেশের অনেক নারীর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
প্রাথমিক জীবন ও বাধা
- শিক্ষা ও বিয়ে: আইনজীবী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে আইন কলেজে ভর্তি হলেও, বিয়ের কারণে তার পড়াশোনা অসমাপ্ত রয়ে যায়।
- পরিবার ও কর্মজীবন: বিয়ের পর, তিনি স্বামীর সহযোগিতায় ২০০৭ সালে একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা শুরু করেন। তবে, ২০১০ সালে তৃতীয় সন্তানের জন্মের পর চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।
উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু
- আত্মকর্মসংস্থানের ভাবনা: চাকরিতে না ফিরে, নিজের কিছু করার ইচ্ছে থেকে মাত্র ৩০০ টাকা পুঁজি নিয়ে ক্যাটারিং ব্যবসা শুরু করেন।
- প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন: ব্যবসা উন্নত করতে ঢাকায় ক্যাটারিং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এর পর থেকে তার ব্যবসা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়।
ব্যবসার সাফল্য
- বর্তমান অবস্থা: আজ তার ক্যাটারিং ব্যবসা লক্ষ-লক্ষ টাকার পুঁজিতে পরিণত হয়েছে, যেখানে তিনি পাঁচজন নারী কর্মী এবং একজন ডেলিভারি ম্যানকে কর্মসংস্থান দিয়েছেন।
- সম্প্রসারণ: নিজের রেস্টুরেন্ট খুলার পরিকল্পনা আছে, যেখানে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য মানসম্মত খাবার পরিবেশন করার চিন্তা আছে।
চ্যালেঞ্জ ও অদম্যতা
- ব্যক্তিগত ক্ষতি: ২০২২ সালে স্বামীর মৃত্যুতে গভীর শোকের মুখোমুখি হন, তবে শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে ব্যবসায় মনোযোগ দেন।
- সামাজিক অবদান: নারীদের জন্য ক্যাটারিং প্রশিক্ষণশালা গড়ে তোলার ইচ্ছে রয়েছে, যা নারীদের আত্মনির্ভরশীল করে তুলতে সাহায্য করবে।
পুরস্কার ও স্বীকৃতি
- ২০২০ সালে CYEC Best Women Entrepreneur পুরস্কার পান।
- ২০২১ এবং ২০২৩ সালে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মুনার লক্ষ্য কক্সবাজারের পিছিয়ে পড়া নারীদের ক্ষমতায়ন এবং দেশে দক্ষ নারী শ্রমশক্তি তৈরি করা। তিনি নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচী চালাতে চান।
মুনা চৌধুরী একজন অনন্য উদাহরণ, যিনি নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও দৃঢ় সংকল্পের মাধ্যমে জীবনের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করেছেন। তার জীবনগল্প বাংলাদেশের নারীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা।