স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ২০২১ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসিম্বের) থেকে শুরু হওয়া এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী। তবে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসতে হবে পরীক্ষার হলে। পাশাপাশি আরও অনেক নিয়ম মানতে হবে। এজন্য পরীক্ষার্থীসহ ও দায়িত্বে থাকা শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করে পরীক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ করতে হবে। অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে দেরিতে হলে প্রবেশ করলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় ও বিলম্ব হওয়ার কারণ একটি রেজিস্ট্রারে উল্লেখ করে ওই দিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন পাঠাতে হবে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসি জনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী শ্ৰুতি লেখক সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থী এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ১০ মিনিট সময় পাবে।
এছাড়াও অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম ও সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত পরীক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় পাবে। শিক্ষক, অভিভাবক ও সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় তাদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
এগুলো ছাড়াও আরও যেসব বিষয়ে মন্ত্রণালয় বলেছে সেগুলো হলো—
১. কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছবি তোলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাহীন একটি সাধারণ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন।
২. ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র গ্রহণ ও পরিবহন কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা, শিক্ষক, কর্মচারীরা কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না ও প্রশ্নপত্র বহনের কাজে কালো কাঁচের মাইক্রোবাস বা এ ধরণের কোনো যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না।
৩. প্রত্যেক কেন্দ্রের জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিতে হবে। ট্রেজারি থেকে কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রশ্নপত্র গ্রহণ করে পুলিশ পাহারায় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি ছাড়া প্রশ্ন বের করা যাবে না বা বহন করা যাবে না।
৪. ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সকল সেট কেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে।
৫. প্রশ্নের সেট কোড পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিটি আগে জানানো হবে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সেট কোডে পরীক্ষা নিতে হবে।
৬. কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে বিধি অনুযায়ী প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলতে হবে।
৭. পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না।
৮. অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষা দেরিতে শুরু করতে হলে যত মিনিট পরে পরীক্ষা শুরু হবে পরীক্ষার্থীদের সে সময় থেকে যথারীতি প্রশ্নপত্রে উল্লেখিত নির্ধারিত সময় দিতে হবে।
করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে—
৯. একজনের বেশি অভিভাবক পরীক্ষার্থীর সঙ্গে কেন্দ্রে আসতে পারবে না।
১০. পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে তার রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।
১১. প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশপত্রে উল্লেখিত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
১২. পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। প্রোগ্রামিং ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না।
১৩. সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও বহুনির্বাচনী পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতিপত্র ব্যবহার করতে হবে।
প্রসঙ্গত, এ বছর ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি, আলিম ও এইচএসসি (বিএম/ভোকেশনাল) মিলিয়ে এবারে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন।
সারাবাংলা/টিএস/এনএস