স্পেশাল করসপন্ডেন্ট
ঢাকা: একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে ঐদিনই বাম জোটের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে পর দিন থেকে লাগাতার হরতাল-অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।
বুধবার (৮ নভেম্বর) কমিউনিস্ট পার্টি মুক্তি হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বামজোটের নেতারা এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
এছাড়া আগামী ১০ নভেম্বর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশব্যাপী বাম জোটের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাবের কারণে রাজনীতিতে সংঘাত-সহিংসতা মৃত্যুর মিছিল ক্রমাগত বাড়ছে, এটা থামার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। একদিকে রাজনৈতিক সংকট, পাশাপাশি অর্থনৈতিক সংকটও চরমে। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। মুনাফাখোর সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য জনজীবন অতিষ্ঠ। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ দূরের কথা, সরকার নিজেই সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে কাজ করছে। লুটপাট, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরৎ না দেওয়া, অর্থপাচার, রিজার্ভ সংকট ইত্যাদি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দুর্বিষহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শাসকশ্রেণি ক্ষমতায় থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য একদিকে সাম্রাজ্যবাদের কাছে নতজানু থাকছে, অপরদিকে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছে। অনুমতি পাওয়ার পরেও ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে অনুমতি না দিলেও জামায়াতকে নির্বিঘ্নে সমাবেশ করতে দিয়েছে। বিদেশি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও ধর্মান্ধ মৌলবাদী অপশক্তি দেশকে অগণতান্ত্রিক শাসনে নিয়ে যাওয়ার অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোট সাম্রাজ্যবাদী ও মৌলবাদী শক্তির অপতৎপরায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশবাসীকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সতর্ক থাকা সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাম জোট মনে করে, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনায় সরকার ও বিরোধী দল পরস্পরকে দোষারোপ করে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে, জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। বাম জোট ঐদিনের সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনায় সরকারের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত নিরপেক্ষ বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছে ।
আগামী ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবসে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ দাবিতে দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। ওই দিন ঢাকায় সকাল ৯টায় নূর হোসেন স্কোয়ারে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে বিক্ষোভ মিছিল এবং পল্টন মোড়ে সকাল ১০টায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আইই