ইউনাইটেড নিউজ ২৪ ডেস্ক ::
চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো এলাকায় এক ভিন্নধর্মী দৃশ্য দেখা যায় আজ (১৭ অক্টোবর ২০২৪)। ঘাসফুল প্রাইজ প্রকল্পের মোবাইল সার্ভিসিং প্রশিক্ষণার্থীদের কর্মক্ষেত্র পরিদর্শন করতে আসেন ব্র্যাক স্কিলস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের এরিয়া ম্যানেজার মো: খালেদ মাহমুদ, ডিএম তনুজ হালদার এবং প্রকল্পের কর্মকর্তারা। প্রশিক্ষণকেন্দ্র দোকানে প্রশিক্ষণার্থী তরুণীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে মুখরিত। তাদের চোখে-মুখে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আর হাতে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কলাকৌশল শেখার দৃঢ় সংকল্প।
প্রশিক্ষণার্থীরা গভীর মনোযোগ দিয়ে শিখছে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের খুঁটিনাটি, যা একসময় শুধু পুরুষদের পেশা বলে বিবেচিত হতো। কিন্তু ঘাসফুল প্রাইজ প্রকল্পের এই উদ্যোগ, নারীদের মোবাইল সার্ভিসিং পেশায় যুক্ত করে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। পরিদর্শকরা যখন তাদের সাথে কথা বলেন, তখন প্রশিক্ষণার্থীদের মুখে আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
মেহরিন আকতার খুশি, যিনি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। তার মতে, “মোবাইল সার্ভিসিং পেশায় প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা বেকার কিশোরী ও যুবতীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।” মেহরিনের স্বপ্ন আজ শুধু তার নিজের নয়, বরং তার মতো আরও অসংখ্য নারীর ভবিষ্যৎকে আলোকিত করার প্রতিশ্রুতি। রিমি, নাসরিন, নিশাত—প্রত্যেকেই মোবাইল সার্ভিসিংয়ে নিজেদের জন্য সম্ভাবনার নতুন পথ খুঁজে পেয়েছেন। তারা জানায়, “চট্টগ্রামে নারীরা মোবাইল সার্ভিসিং পেশায় আলো ছড়াচ্ছে।”
প্রশিক্ষণকেন্দ্রের প্রশিক্ষকদের সাথে যখন পরিদর্শকরা কথা বলেন, তখন প্রশিক্ষণের সুবিধা, সমস্যা ও অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রাইজ প্রকল্পের আওতায় ইউনিসেফ ও ব্র্যাকের সহযোগিতায় এই প্রশিক্ষণটি শুরু হয়েছে। প্রকল্পটি মূলত সমাজের সুবিধাবঞ্চিত কিশোর-কিশোরী ও যুবকদের জীবনমান উন্নয়নে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
ঘাসফুলের প্রকল্প সমন্বয়কারী সিরাজুল ইসলাম প্রশংসা করে বলেন, “মোবাইল সার্ভিসিং পেশায় নারীরা যে অগ্রগতি করছে, তা প্রশংসার যোগ্য। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলছে এবং ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”
ঘাসফুল প্রাইজ প্রকল্পের এই উদ্যোগ চট্টগ্রামের তরুণীদের সামনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। মোবাইল সার্ভিসিংয়ের মতো প্রযুক্তিনির্ভর পেশায় নারীদের যুক্ত করে প্রাইজ প্রকল্প একটি নতুন বিপ্লবের সূচনা করেছে। তারা শুধু নিজেদের জীবনের মান উন্নত করছে না, বরং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে। নারীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে এই উদ্যোগটি সত্যিই অনন্য।
চট্টগ্রামের আতুরার ডিপো এলাকায় আজকের এই দৃশ্য প্রমাণ করে, মোবাইল সার্ভিসিং পেশায় নারীরা শুধু নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করছে না, বরং উদ্যোক্তা হয়ে সমাজে জোনাকীর ন্যায় নিজস্ব আলো ছড়ানোর সুযোগ পাচ্ছে।