সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ট্রাম্পকে সামলাতে পারে না আর বাংলাদেশকে ধমক দেয়। ট্রাম্পকে সামলাতে তো পারছেন না? বেপরোয়া ট্রাম্প মানছেন না। ডোন্ট কেয়ার ভাব। আবার জনমত জরিপ বলে তিনি এগিয়ে আছেন, এ কেমন আপনাদের গণতন্ত্র?
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করেন তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, পঁচাত্তরের পর এই দেশে শেখ হাসিনার চেয়ে জনপ্রিয় একজন নেতাও কি এসেছেন। গত ৪৮ বছরে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা, সাহসী নেতা ও দক্ষ প্রশাসক। সবচেয়ে সফল কূটনীতিক। এখনো বাংলাদেশে জনপ্রিয় রাজনৈতিক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তার জুড়ি একজনও নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমাদের নিষেধাজ্ঞা-ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। মজার ব্যাপার হচ্ছে নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন আর ভয় দেখায় মির্জা ফখরুল। ভিসানীতি দেয় ওয়াশিংটন, ভয় দেখায় বিএনপির মহাসচিব। কি অদ্ভুদ কাণ্ড?’
এসময় বিএনপির উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষ তারপর কি কবে? খেলা তো হবেই। ক্যাপ্টেন আমেরিকায় আছে। ক্যাপ্টেন আসলে জোরদার খেলা হবে। তৈরি হয়ে যান। ক্যাপ্টেন আসুক তারপর হবে।’
তিনি বলেন, ‘একাত্তরের নিষেধাজ্ঞা ভয় পেলে বাংলাদেশ কোনো দিন স্বাধীন হতো না। নিষেধাজ্ঞা ভয় করলে বঙ্গবন্ধু এই দেশ স্বাধীন করতে পারতেন না। তাই আজকে নিষেধাজ্ঞাকে ভয় করলে বাংলাদেশে অগ্রযাত্রা-সমৃদ্ধির সোনালি অর্জন রাখতে পারব না।’
‘আমাদের গণতন্ত্র আমাদের সংবিধান ঠিক করবে। আমাদের নির্বাচন আমাদের সংবিধান নির্ধারণ করবে। আমরা তত্ত্বাবধায়ক মানি না। ওটা এখন মরা লাশ। ওই লাশ আমাদের কাছে এনে লাভ নেই। ২০০১ সালে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনকেও দেখেছি। বাংলাদেশে ওই তত্ত্বাবধায়কের ইতিহাস জানা আছে। ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন লতিফুর রহমানের সেই তত্ত্বাবধায়ক বাংলাদেশে চালু করে আরেকটা অস্বাভাবিক সরকার করবেন, সেটা আর হবে না’- বলেন ওবায়দুল কাদের।
অস্বাভাবিক সরকার মানি না দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘কে আসুক কে বলুক তাতে কিছু আসে যায় না। জো বাউডেন সাহেব আজকেই বলেছেন, গণতন্ত্র হুমকির মুখে। ট্রাম্পকে সামলাতে পারে না আর বাংলাদেশকে ধমক দেয়। ট্রাম্পকে সামলাতে তো পারছেন না, বেপরোয়া ট্রাম্প মানছেন না। ডোন্ট কেয়ার ভাব। আবার জনমত জরিপ বলে তিনি এগিয়ে আছেন। এ কেমন গণতন্ত্র? ৬ জানুয়ারিতে ছয়টা প্রাণ শেষ। রক্তে রক্তে ভিজে গেল আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল হিল।’
আমেরিকায় প্রতিদিন মানবাধিকার লঙ্ঘিত অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তাহলে আমাদের কেন দোষ দেন? আবার দালাল লাগাইছেন। ফখরুল ইসলাম নতুন দালাল। ওই দালালে আমাদের ভয় দেখায়। ভয় দেখায় নির্বাচন করবে না। ভয় দেখায় শেখ হাসিনার অধীনে ইলেকশন হবে না। আমি আজ বলে দিচ্ছি, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা ছাড়া নির্বাচন মানি না। শেখ হাসিনা ছাড়া এই দেশে এমন কোনো নেতা নেই মানুষ যাকে বিশ্বাস করে। একজন নেতাকেই মানুষ বিশ্বাস করে। সেই নেতার নাম শেখ হাসিনা। ষড়যন্ত্র করে ওই নেতাকে বাদ দেবেন? বহুদিন পর বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যা করার পর বঙ্গবন্ধু কন্যা আজকে বাংলাদেশকে আলোর পথে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এই বাংলাদেশকে আবারও ষড়যন্ত্র করে অন্ধকারে নিয়ে যাবেন। খাদে বসাবেন, আমরা হতে দেব না।’
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জি. মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, আইন বিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল। সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
সারাবাংলা/এনআর/এনএস