ডা. রাহনুমা পরভীন
রাজধানী ঢাকাসহ এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু জ্বর। ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে মানুষ রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছে। তবে বারবারই বলা হচ্ছে, এবার ডেঙ্গু ভাইরাস তার ধরন পরিবর্তন করে আক্রমণ করছে। এই ভাইরাস নিয়ে বড় ধরণের গবেষণার প্রস্তুতিও চলছে। তবে যে কথাটি আমরা এই হৈচৈ-এর মাঝে ভুলে যাচ্ছি তা হলো— এখন যারা ডেঙ্গু জরে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের অধিকাংশই দ্বিতীয় বা তৃতীয় দফায় আক্রান্ত ব্যক্তি। এ কারণেই এবারে ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো প্রায়ই আমাদের কাছে আগের তুলনায় ভিন্ন মনে হচ্ছে।
তবে যতই রূপ পরিবর্তন হোক না কেন, ডেঙ্গু ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পদ্ধতিতে নতুন কোনো পরিবর্তন আসেনি। ডেঙ্গু জ্বরের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। অর্থাৎ এমন কোনো ওষুধ নেই যেটা খেলে আপনার ডেঙ্গু জ্বর ভালো হয়ে যাবে বা ডেঙ্গু জ্বরের মারাত্মক লক্ষণগুলো আর দেখা দেবে না।
ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা তো হবে কিন্তু প্রতিরোধে করণীয় কী? ডেঙ্গু জ্বর থেকে বাঁচার প্রধান উপায় ডেঙ্গু মশার জন্ম রোধ করা। ডেঙ্গু ভাইরাস কিন্তু মশার ডিমের মাধ্যমে পরবর্তী মশক প্রজন্মে পরিবাহিত হয়। তাই ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধই ডেঙ্গু থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। আর সেটার জন্য প্রশাসনিক উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের সদিচ্ছারও প্রয়োজন আছে। আমাদের নিজ উদ্যোগে নিজেদের বাসগৃহ ও কর্মস্থল, বাড়ি ও অফিসের ছাদে, কার্নিশে, পার্কিংয়ে এবং অন্যান্য সন্দেহজনক স্থানে পরিষ্কার পানি জমতে দেওয়া রোধ করব।
সিঙ্গাপুর সরকার ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে হঠাৎ হঠাৎ বিভিন্ন বাসাবাড়ি, অফিসে হানা দেয়, খুঁজে দেখে কোথাও জমানো পানি আছে কি না। জমানো পানি খুঁজে পাওয়া গেলে বড় অঙ্কের অর্থদণ্ড দিতে হয়। তাই দেশটিতে প্রতিটি নাগরিক নিজ গরজেই নিজেদের বাসা-অফিসে পানি জমতে দেয় না। বাকি কাজটুকু সরকার করে। আমাদের নিজেদের এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এডিস তথা ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে ও মশা নিধনে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি আমরা নিজেরা কী করছি। ডেঙ্গুর কিন্তু কোনো জাতপাত ভেদাভেদ নেই। তাই নিজেদের প্রয়োজনেই নিজেদেরই সতর্ক হতে হবে।
সারাবাংলা/এসবিডিই