সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আমেরিকার ভিসানীতির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা চাই। নিষেধাজ্ঞার কী হলো? ভিসানীতির কী হলো? আমার নির্বাচন আমরা করব, ফ্রি করব ফ্রেয়ার করব, ক্রেডিবল ইলেকশন করব। তুমি বুদ্ধি দেওয়ার কে? তুমি বলার কে?
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আল্টিমেটাম তো শেষ? গোলাপবাগের গুরুর হাটে আন্দোলন শেষ। তারপরে কত পদযাত্রা কত পশ্চাৎযাত্রা দেখলাম। তারপরে দেখলাম কত মরণযাত্রা? এই যাত্রায় যাত্রায় শেষ। শেষে আল্টিমেটাম। ৪৮ ঘণ্টা তো শেষ! ফখরুল সাহেব এখন কী করবেন আপনি? ৪৮ ঘণ্টা তো শেষ।’
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা বিএনপি নামে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে শুরু করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনো ছাড় নেই। হুমকি দিয়ে লাভ নেই। হুমকি দিয়ে লাভ নেই। বৃহৎ শক্তির হুমকিকেই বঙ্গবন্ধুর কন্যা পরোয়া করেন না। আর আপনারা কি হুমকি দিবেন? ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন হতে দেবেন না? দেখি কে নির্বাচন ঠেকাতে আসে? কে ঠেকাতে আসে? আশায় আশায় দিন চলে যায় কি আশায় বাঁধি খেলাঘর? এ খেলাঘর বেদনার বালুচর। নব আশায় আশায় বেদনার বালুচরে গড়ে তুলছেন, এই খেলাঘর ভেঙে যাবে। এই মায়া-মরীচিকা থাকবে না। থাকবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা। আসলেই থাকবে। মানুষ যাকে ভালবাসে। মানুষ যার সঙ্গে আছে, সেই থাকবে।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা আমার মায়ের কোল খালি করেছে। যারা আমার সারাদেশ লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। যারা দুর্নীতিতে পাঁচ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ান। যারা ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তৈরি করেছে। আজিজ মার্কা নির্বাচন লতিফুর মার্কা নির্বাচন বাংলাদেশে আর হবে না। ফখরুল সাহেব যতই ষড়যন্ত্র করেন ওটা (তত্ত্বাবধায়ক) আর হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমির খসরু বলে আর অনুমতি নেবেন না? আইন মানবেন না? বিচার মানবেন না? অনুমতি না নিয়ে কোথায় যাবেন? জনতা যখন ধাওয়া দেবে তখন কর্ণফুলীতে গিয়ে ডুববেন? কর্ণফুলি তো কাছেই আছে! মানবেন না কী করবেন? কী নিয়ে আসবেন? নাশকতা নিয়ে আসবেন আগুন নিয়ে আসবেন ওই নাশকতার কালো হাত আমরা ভেঙে দেব ইনশাআল্লাহ। নাশকতা করতে দেব না। রেডি আছেন। ক্যাপ্টেন (শেখ হাসিনা) ডাক দেবেন সময়মতো।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এখন ঘুম হারাম। ৩৬ দিন এক কাতারে মাঠে থাকতে হবে। মাঠ ছাড়ব না। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করব।’
‘পঁচাত্তরের ব্যর্থতা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা সপরিবারের রক্তাক্ত হয়ে গেলেন। সপরিবারের লাশ হয়ে গেলেন আর এই শহরে প্রতিবাদ করার মতো আমরা কেউ কি ছিলাম না। আজকে তরুণরা মিছিল করে শেখ হাসিনার কিছু হলে সারাবাংলায় আগুন জ্বলবে। এটি যেন মনের কথা হয়। একটা মিছিল আমরা করতে পারিনি। নেতৃত্বের এই দগদগে ব্যর্থতা আমরা টানব কেমন করে? সময়ে কর্মীদেরও নেতা হতে হয় আর নেতাদের কর্মী হতে হয়। নেতাদেরও কর্মী হতে হবে। প্রয়োজনেও কর্মীদেরও নেতৃত্ব দিতে হবে। সেটির অপর নাম সাহস। এ সাহস আর সততাই শেখ হাসিনাকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। এই সততা আর সাহসিকতা; শেখ হাসিনার দুই গুন। এই দুই গুণেই বাংলাদেশের রাজনীতির দুস্তর পথে টিকিয়ে রেখেছে।’
বঙ্গবন্ধুর সততা শেখ হাসিনার সততা অনুসরণ করার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান এবং সেই সাহসে নিজেদের সাহসী করার আহ্বান জানান।
ঢাকা শহর দখল করবেন? খবর আছে? আমরাও কিন্তু রেডি। এবার আর মাঠ খালি নেই। কোথা দিয়ে ঢুকবেন? কোথা দিয়ে যাবেন? পালাতে পালাতে বুড়িগঙ্গা আর কই যাবেন বলে বিএনপির হুমকি দেন ওবায়দুল কাদের।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, আইন বিষয়ক সম্পাদক নাজিবুল্লাহ হিরু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল।
সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
সারাবাংলা/এনআর/একে