স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে বাংলাদেশের মানুষের যে দীর্ঘ সংগ্রাম, সেটা ভেস্তে যাবে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ‘বিএনপি-জামায়াতের হত্যা, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, অগ্নিসন্ত্রাস-নৈরাজ্যের প্রতিবাদে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে উন্নীতকরণের লক্ষ্যে’ যুবলীগের আয়োজিত যুব সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ২০০১ সালে যখন ক্ষমতা দখল করেছিল, বিএনপি-জামায়াত আমাদের প্রায় ২৫ হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থকদের হত্যা করেছিল। অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের পঙ্গু করে ফেলেছিল, এবং বহু নেতা-কর্মীদের জেলে পুরে ছিল। ১৭ আগস্ট এবং ২১ আগস্ট ঘটিয়ে ছিল। আহসানুল্লাহ মাস্টার, শাহ এস এম কিবরিয়া হত্যাসহ আমাদের শীর্ষ নেতৃত্বকে ওরা নিঃশেষ করে ফেলতে চেয়েছিল। ধিক্কার জানাই বিএনপি নামক ওই তথাকথিত বিরোধীদলকে, যারা যুদ্ধাপরাধীদের প্রশ্রয় দিয়েছে। তাদের সাথে আঁতাত ও আপস করে তাদের হাতে বাংলাদেশের পতাকা তুলে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অপমান করেছিল।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে যুবসমাজ। আর যদি কোনো অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর স্বপ্ন দেখে থাকেন, সে স্বপ্ন দিবাস্বপ্ন ছাড়া আর কিছু না।
তিনি আরও বলেন, নিঃশর্ত ঐক্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সকল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে এবং যদি আমাদের মধ্যে সমন্বয় থাকে তাহলে কোন যুদ্ধাপরাধী, কোন রাজাকার, কোন আলবদরদের বংশধররা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, আওয়ামী লীগের নৌকাকে পরাজিত করতে পারবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আন্দোলনের নামে রাজধানী অবরোধ করলে বিএনপির অবস্থা শাপলা চত্বরের চেয়েও করুণ হবে। তিনি বলেন, আমরাও প্রস্তুত আছি। ঢাকা অবরোধ করলে বিএনপিও অবরোধ হয়ে যাবে। এখন না হয় তারা চুরি করে ঢাকায় ঢুকেছে, এরপর তারা পালাবার পথ পাবে না। শাপলা চত্বরে কী হয়েছিল, মনে আছে? শেষ রাতে সবাই পালিয়ে গিয়েছিল। বিএনপির আরও করুণ পরিণতি হবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি নেতা রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে সরকার বিষ দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ যে বাসায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে, সেটা তারই বাসা। তার চিকিৎসার নেতৃত্বে রয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা এবং ড্যাবের সভাপতি ডা. জাহিদ। তাদের পরামর্শেই চিকিৎসা চলছে। এখন আমাদের সাবধান হতে হবে। কেননা খালেদা জিয়াকে বিষক্রিয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি কোনো ছক কষছে কিনা। তারা নিজেরাই খালেদা জিয়াকে হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় কিনা- এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, দেশবিরোধী অপশক্তি বিএনপির নেতারা কাকে প্রধানমন্ত্রী বানাবেন, তা তারা নিজেরাও বুঝতে পারছেন না। খালেদা জিয়া তো মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। অন্যদিকে, তারেক জিয়া রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন। এই ধরণের মানুষরা নাকি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন। আজকে যারা বিএনপি করেন, তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে কাজ করছেন।
যুব সমাবেশ সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
সারাবাংলা/আইই