পৃথিবীতে হরেক রকম ফল আছে। আমরা সাধারণত দেশের বাজারে পাওয়া সহজলভ্য ফলগুলোই খেয়ে থাকি। কিন্তু এর বাইরে বিদেশী ফল ও বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে এবং ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এবং বিদেশী ফলগুলোকে আরও জনপ্রিয় করতে এবং মানুষের কাছে আরও সহজলভ্য করতে কাজ করে যাচ্ছে ফলের ঝুড়ি যার যাত্রা শুরু হয় নাহিদ আরেফিন এর হাত ধরে।
নাহিদ আরেফিন তার পড়াশুনা শেষ করে এখন চাকরি করছেন। তিনি স্নাতক সম্পন্ন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং স্নাতোকোত্তর সম্পন্ন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বর্তমানে কর্মক্ষেত্রের জন্য কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। তার মাথায় এই ব্যবসার চিন্তা প্রথমে আসে ২০২০ এ যখন প্রথন লকডাউন শুরু হয় তখন। তিনি রংপুরের বিখ্যাত হাড়িভাঙা আম সবার কাছে পৌছে দেওয়ার ইচ্ছা থেকে শুরু করেন ফলের ঝুড়ি। সেখান থেকে ধীরে ধীরে বিদেশী ফলের দিকে ঝুঁকে পড়েন। বর্তমানে এভোক্যাডো, চেরী, ড্রাগন ফ্রুট, কিউই,স্ট্রবেরী সহ বিভিন্ন রকম ফল সরবরাহ করে থাকেন।
ফলের ঝুড়ির শুরু করার সময় তাকে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করেন তার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটভাই শুভ এবং মেজবাহ। তিনি বলেন, সবসময়ই তার ব্যবসা করার চিন্তা ছিলো, সেখান থেকেই এখানে আসা। এর আগেও তিনি কার রেন্টালের ব্যবসায়িক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু যখন ফলের ব্যবসা করার কথা চিন্তা করলেন, তখন থেকে তার সাথে শুভ এবং মেজবাহ ছিলেন। তার কাজে সবসময় এই দুজন এবং তার পরিবার তাকে অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন। শুভ পরে ব্যক্তিগত কারণে ফলের ঝুড়ির সাথে যাত্রা চালিয়ে না যেতে পারলেও মেজবাহ এখনও যুক্ত আছেন ফলের ঝুড়ির সাথে। বর্তমানে তার অধীনে প্রায় ১০জনের মতো কর্মচারী কাজ করছেন ক্রেতাদের পছন্দমতো ফল পৌঁছে দিতে। প্রথমে তিনি শুধু গুলশান, বসুন্ধরা এবং উত্তরায় বিদেশী ফল সরবরাহ করতেন। এরপর তা সমগ্র ঢাকায় বিস্তৃত করেন। এখন তিনি তার কার্যক্রম ঢাকা এবং চট্টগ্রামে চালাচ্ছেন।
নাহিদ আরেফিনের এই পথযাত্রা সবসময় মসৃণ ছিলোনা। প্রথমে যখন তিনি রংপুর থেকে হাড়িভাঙা আম আনতে শুরু করলেন, তার কাছে অনেক সময় আম আসতে আসতে দেরী হতো, অনেক সময় আম ডেলিভারি পেয়ে দেখতেন অনেক আম পচে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে ক্রেতার দূর্ব্যবহার সহ্য করতে হয়েছে। বিদেশি ফলের ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক দাম দিয়ে তিনি ফল আনলেও সেটা অনেক ক্ষেত্রে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি অথবা হঠাৎ চাহিদা কমে যাওয়ায় তার বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
এই ব্যবসা করে নাহিদ বেশ ভালো আয় করছেন। তার সর্বোচ্চ লাভ এসেছিলো ২ লাখ টাকার কাছাকাছি। কিন্তু সবসময় যে এরকম হয় তা নয়। কিছু মাসে ক্ষতিও হয়েছে। সব মিলিয়ে মাসিক তার ৩০-৪০ হাজার টাকার মতো তিনি লাভ করে থাকেন এই ব্যবসা থেকে।
নতুন উদ্যোক্তা যারা নাহিদের মতো এরকম ব্যবসায় আসতে চান, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “প্রথমে যেই ব্যবসায় নামতে চাচ্ছি, সেই প্রোডাক্ট সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে, সেই প্রোডাক্টের মার্কেট কেমন তা জানতে হবে এবং ক্রেতার মানসিকতা পড়তে জানতে হবে”। অনেকে অনেক সময় একসাথে অনেক টাকা বিনিয়োগ করে, সেটাকে তিনি অনুৎসাহিত করেন। তার মতে একসাথে অনেক টাকা বিনিয়োগ না করে ধাপে ধাপে কম করে টাকা বিনিয়োগ করতে। তাহলে ক্ষতি হলেও সেটার পরিমাণ কম থাকে।
নাহিদ আরেফিনের ফেসবুক পেইজ “ফলের ঝুড়ি” থেকে অর্ডার করতে এখানে ক্লিক করুন।
আমাদের আরও ব্লগ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
আহমাদ সৈয়দ
ইন্টার্ন, কন্টেন্ট রাইটিং ডিপার্টমেন্ট
YSSE