এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট থেকে ::
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মেহেদীর রং শুকানোর আগেই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে স্বামীর মৃত্যুতে বিধবা হল তন্নী আক্তার এমন অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনটাই ঘটেছে ।থানা কর্তৃক এক ওয়ারেন্টি আসামিকে আটক করার সময় শাফায়েত তালুকদার(৩০) নামে এক যুবক নিহত ও অপর দুজন আহতের ঘটনা ঘটেছে। নিহত শাফায়েত জিউধরা গ্রামের ফারুক হোসেন তালুকদারের ছেলে।
মঙ্গলবার(৬মে) বেলা ৮ টার দিকে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের জিউধরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বেলা ১০ টার দিকে নিহত শাফায়েত হোসেনের মরদেহ, আহত তার চাচা শাহিন তালুকদার(৫৮) ও চাচাতো ভাই একই গ্রামের সোহেল তালুকদারকে থানা পুলিশ হাসাপাতালে পৌছে দিয়েছে।
মোরেলগঞ্জ হাসপাতালের কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশের গাড়িতে করে ৩ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে শাফায়েত তালুকদারকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। সবকজনেরই শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিটের চিহ্ন দেখা গেছে।
নিহত শাফায়েত তালকুদারের মা শাফিয়া বেগম ও সদ্য বিবাহিত স্ত্রী তন্নী বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যারা শাফায়াতকে বিনা অপরাধে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আরো বলেন, আমার মেহদীর রং শুকাতে পারেনি, আমি বিধবা হলাম,আমার সব আশা- ভালবাসা শেষ হইয়া গেছে।আমার স্বামীর কোন অপরাধ ছিল না।পুলিশ আমার স্বামীকে ধরে হত্যা করেছে। এমন বিলাপে হাসপাতালের আকাশ বাতাশ ভারি হয়ে উঠেছে।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সোহেল নামে এক ওয়ারেন্ট আসামিকে আটকের জন্য পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে ডাকাত ডাকাত বলে পুলিশের ওপর কিছু লোক হামলা করে। পরে পুলিশ তাদের জনবল বাড়িয়ে ও সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় শাফায়েত, শাহিন ও সোহেলকে আটক করে থানার উদ্দেশে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে শাফায়েত মারা যায়। সে এক মাস পূর্বে তন্বী নামে এক নারীকে বিয়ে করেছিলো।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১টি ছোরা, রাম দা, চাকু, লাইসেন্সসহ ১ নলাএকটি বন্দুক, ২১টি কার্তুজ, ৩ টি মোবাইল ফোন, ৬ টি পুলিশের পোশাক ও ২২ বোরের ৯টি গুলি উদ্ধার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানা অফিসার ইনচার্য ( ওসি) মো:রাজিব আল রশিদ।
এদিকে মোরেলগঞ্জ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: হাবিবুল্লাহর নেতৃত্বে লাশের সুরাতহাল রিপোর্ট করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে রাত ৮ টার দিকে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন।