স্টাফ রিপোর্টার ::
বরিশাল নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা সিএন্ডবি রোড এলাকায় গত ২৮ এপ্রিল সন্ধা ৬ টায় ডাক্তারের অপচিকিৎসায় বরিশাল সেন্ট্রাল হাসপাতালে রুবি (৩৫) নামে এক এক প্রসূতির মৃত্যু হয়।
এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইনি ঝামেলা এড়াতে ৫ লাখ টাকায় মৃতের পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা করেছে বলে জানা গেছে।
মৃত রুবি (৩৫) বরিশাল নগরীর দীয়াপাড়া কাশিপুর ২৮ নং ওয়ার্ডের মোঃ রফিকের স্ত্রী। এবং তিন সন্তানের জননী।
জানা গেছে, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে সমঝোতা হওয়ার হয়। মৃত্যুর সময়ে গত বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধায় নিহতের স্বজনরা দুই ঘণ্টা বরিশাল সেন্ট্রাল হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রোগীর স্বজনরা জানান, গত ২৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ৯টার দিকে অসুস্থতা বোধ করলে রুবিকে এক দালালের মাধ্যমে বরিশাল নগরীর চৌমাথা এলাকার সেন্ট্রাল হসপিটালে ভর্তি করা হয়। ভর্তি করার কিছু সময় পর কর্তব্যরত ডাক্তার জানায়, জরুরি ভিত্তিতে রুবিকে সিজার করতে হবে, তা না হলে সমস্যা হবে। কিন্তু তখনও রুবি সুস্থ ছিল। অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার পর সে বাচ্চা প্রসব করে এবং শিশুটিকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। কিছুক্ষণ পরে প্রসূতিকে তার নির্ধারিত কক্ষে আনা হলেও তখনো তার জ্ঞান ছিল না। পরবর্তীতে বিকেল নাগাদ কিছু সময়ের জন্য জ্ঞান ফিরলেও আবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন ডাক্তার ও নার্স এসে একটি ইনজেকশন দেয়ার কিছুক্ষণ পরেই সে মারা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল সেন্ট্রাল হাসপাতালে সার্জন ও অ্যানাস্থেশিয়া দেওয়ার মতো বিশেষজ্ঞ নেই। অস্ত্রোপচারের সময় বাইরে থেকে চিকিৎসক নিয়ে আসা হয়। রুবি’র অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন বরিশাল সিভিল সার্জন অফিসের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার মুন্সি মুবিনুল হক।
এ ব্যাপারে অস্ত্রোপচারের সময় দায়িত্বরত চিকিৎসক ডাক্তার মুন্সি মুবিনুল হক জানান, রোগীর মেডিকেল রিপোর্টে সব কিছু ঠিক ছিল। আমি সকাল ৯ টায় অপারেশন করে চলে আসি রোগী সারাদিন সুস্থ ছিলো, ৫ টার দিকে হাসপাতাল থেকে আমাকে ফোন করে জানায় রোগির অবস্থা ভালো না, আমি গিয়ে দেখি রোগি মারা গেছে। এর আগে ৫ টার দিকে রোগীর ব্যাথা উঠলে ডিউটি ডাক্তার সেকমো সাজ্জাদ হোসেন রোগিকে “Atropine” নামক ইনজেকশন দিলে কিছু ক্ষন পরে রোগি মারা যায়। এটা হাসপাতাল কতৃপক্ষের অবহেলায় রোগী মারা গেছে। রোগীর স্বজনদের অভিযোগ মেয়াদ উত্তির্ন ইনজেকশন দিয়ে রুবি কে হত্যা করা হয়েছে।
অভিযুক্ত হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার খান অসীমের কাছ থেকে অর্থ নেওয়ার ব্যাপারে মৃতের স্বজনদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্রে, রুবির মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে নিহতের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজিমুন করীম জানান বরিশাল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় এখনও রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে রোগীর চিকিৎসার সব কাগজপত্র সংরক্ষণ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।