স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডোনাল্ড লু‘র বক্তব্য নিয়ে ‘সরকার মিথ্যাচার করেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ডোনাল্ড লু ঢাকা সফর নিয়ে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার মিডিয়াকে ব্যবহার করে যে কথাটা বলতে চেয়েছে, সেটি হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পরিবর্তন করেছে, তারা এই নিষেধাজ্ঞা (র্যাবের ওপর) তুলে নেবে এবং বাংলাদেশের সরকার গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচন করতে চায়—এই ধরনের একটা ধারণা তারা (সরকার) জনগণকে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
‘কিন্তু গতকাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে দ্যাটস ইজ এনাফ টু এক্সপ্লেইন দিস, দূতাবাসের সেই স্টেটমেন্টে সেটা ক্লিয়ার হয়ে গেছে। অতীতেও এই গণবিরোধী সরকার মিথ্যাচার করেছে। এটা খুব দুঃখের, লজ্জার বিষয়। এবার তারা মিথ্যাচারটা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে। সঙ্গে সঙ্গেই দূতাবাস সেটার প্রতিবাদ জানিয়েছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
লু‘র সফর নিয়ে বিএনপির পর্যবেক্ষণ জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বরাবরই যেটা মনে করি যে, বিদেশের শক্তির ওপর নির্ভর করে কখনো গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করা যায় না। জনগণের শক্তির ওপরেই এখানে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বরাবর। এবারও জনগণ এই সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে, জনগণ সমস্ত বাধা-বিপত্তি-নির্যাতনকে উপেক্ষা করে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের যে প্রতিবাদ জানাচ্ছে, সংগঠিত হচ্ছে।’
‘সুতরাং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলুন, চীন বা রাশিয়া বলুন বা ভারত বলুন তারা কী বলল না বলল…। অবশ্য জিয়ো-পলিটিক্যাল সিচুয়েশন তো থাকেই। তবে আমরা যেটা লক্ষ্য করছি, গণতন্ত্রের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের যে কমিটমেন্ট, সেই কমিটমেন্ট তারা খুব দৃঢ়তার সঙ্গে প্রকাশ করেছে। একটা সুষ্ঠু নির্বাচন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের যে কমিটমেন্ট, সেটা তারা ব্যাক্ত করেছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কীভাবে মন্ত্রীরা বলেন, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। একথা তিনি (লু) বলেননি। আমরা কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা আরোপে খুব আনন্দিত নই। আমরা বার বার বলেছি, এই নিষেধাজ্ঞা মানে হচ্ছে আমাদের জন্য লজ্জাজনক, বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এই নিষেধাজ্ঞা আসা উচিত সরকারের ওপরে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিল কী দিল না, দিস ইজ নট এ মেটার। সরকারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে জনগণ এবং সামনে জনগণ এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। আমরা তো বলেই দিয়েছি যে, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাব না। এটা খুব পরিষ্কার কথা। আমরা বিশ্বাস করি, এই সরকারের অধীনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যিনি আছেন, তার অধীনে কখনই নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য হবে না।’
বিএনপির সঙ্গে ডোনাল্ড লু‘র কোনো সাক্ষাতের কর্মসূচি ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না আমাদের সঙ্গে তার কোনো প্রোগ্রাম ছিলো না। এবার কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তারা বৈঠক করেনি।’
সারাবাংলা/এজেড/এনইউ