সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, পকেট থেকে কমিটি আসা এটাই আগে স্বাভাবিক ছিল। সেই পকেট থেকে বেরিয়ে এসেছে আদর্শবিরোধী অজগর সাপ, জাতি সাপ। কিন্তু, যারা আজকে এখানে নেতা হয়ে বসে আছেন তারা আদর্শবান কর্মী। তারা অগ্নিপরীক্ষায় পরীক্ষিত। কাজেই তারা কোনোদিন ভুল করবেন না।
শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের পরিচিতি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আট শতাধিক ইউনিট কমিটি উপহার দেওয়ার মতো অসাধ্য সাধন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, এই অসাধ্য সাধনের নামই আওয়ামী লীগ। ইউনিট কমিটি, এটি একটি অষ্টম আর্শ্চযের বিষয় ছিল। আগে ছিল পিরামিডের মত। মহানগর কমিটি, তারপরে থানা কমিটি, তারপরে ওয়ার্ড কমিটি। তারপর ইউনিট কমিটি হয়েছিল কি না জানা নেই।
এ সময় মহানগর উত্তর কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত নেতাদের নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর সম্বলিত একটি বই করার আহ্বান জানান নানক।
তিনি বলেন, ক্ষমতার ১৩ বছর পার হয়ে ১৪ বছরের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আর কিছুদিনের মধ্যে কাউন্টডাউন শুরু হবে। উল্টাগোনা শুরু হবে। সেই কাউন্টডাউন যদি করেন তাহলে কারও ঘুম হওয়ার কথা নয়। কারণ নির্বাচন আমাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের মতো একটি যুদ্ধ।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হলে স্বাধীনতা পরাজিত হবে, সার্বভৌমত্ব পরাভূত হবে উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, মনে রাখতে হবে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত এক হয়েছে। ওরা এক মায়ের পেটের তিন ভাই। ওদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
নানক বলেন, শেখ হাসিনা যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নিরন্তর যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন ভাই হারা, মা হারা, বাবা হারা, আত্মীয় স্বজন হারা এক জন মানুষ। সেই ১৯৮১ সাল থেকে আজও প্রতিদিন লড়াই করে যাচ্ছেন। প্রতিক্ষণে লড়াই করছেন। ওই নমরুদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন, ওই ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। সেই লড়াইয়ে সতর্ক থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে ষড়যন্ত্র চলছে, সেই ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করে দিয়ে বিজয় কেতন উড্ডীন রাখতেই হবে। এছাড়া আমাদের কাছে কোনো পথ খোলা নেই।
একাত্তরের মতো বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ওরা ভয়ংকর মূর্তি নিয়ে এসেছিল। ওরা ভেবেছিল আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা যাবে। বঙ্গবন্ধুকে চিরদিনের জন্য নিশ্চিহ্ন করা যাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু নিশ্চিহ্ন হওয়ার নয়। মনে রাখতে হবে, লন্ডনে ওই তারেক রহমান মানি লন্ডারিং মামলায় পালিয়ে রয়েছে। ওই তারেক রহমানরা বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে। সেই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে পথ চলতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের পরের দুই বছরে প্রতি দিনকে এক একটি বছর মনে করে কাজ করার আহ্বান জানান এবং আচার-আচরণে মানুষ যেন ব্যথিত না হয়, মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে তাদের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়ানোসহ সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
এই অনুষ্ঠান থেকে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম মহানগর আওয়ামী লীগকে চলতি বছরের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান। সেই মোতাবেক মহানগর নেতাদের সামনের দিনগুলো কাজে লাগিয়ে থানা ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলন করার আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতারা। এছাড়া নবনির্বাচিত ইউনিটি কমিটির দুই জন নেতাও সভায় বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/এনআর/একেএম