স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রের প্রতীক’ ‘গণতন্ত্রের মা’ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নানাবিধ জটিল রোগে তিনি এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। মেডিকেল বোর্ড তার শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে বিস্তারিত যা তুলে ধরেছে, তা উদ্বেগজনক। চিকিৎসকগণ তার অবনতিশীল গুরুতর শারীরিক অবস্থার কথা বলেছেন। এক প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দেশনেত্রীর জীবন।’
তিনি বলেন, ‘দেশে চিকিৎসা দেওয়ার মতো আর কিছু বাকি নেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন রক্ষা করতে হলে অবিলম্বে বিদেশে উন্নত ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন।’
রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্র উদ্ধারের অবিসংবাদিত এই নেত্রী শত নির্যাতনের মুখেও নিজ লক্ষ্যে স্থির থেকেছেন। তাকে বিন্দুমাত্র টলানো যায়নি। গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ জনগণের জীবনমানের উন্নতির জন্য দেশনেত্রীর অবদান অবিস্মরণীয়।’
তিনি বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক ও উপবৃত্তি চালুর মাধ্যমে এক ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছেন সমাজ উন্নয়নে। বেগম জিয়ার আমলে প্রাকৃতিক এবং রাজনৈতিক দুর্যোগকে সামলাতে গিয়ে দেশকে খাদ্য সংকট অথবা দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেননি। বরং তার দক্ষ নেতৃত্বে দেশ ছিল খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন এবং সকল অনিশ্চয়তা থেকে মুক্ত।’
রিজভী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠতেই পারছে না। সমস্ত মানবিকতাকে বিসর্জন দিয়ে প্রতিহিংসা পূরণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি, মৌলিক মানবাধিকার, মানবিক মর্যাদা, অন্যের প্রতি সম্মান মুছে ফেলার জন্যই দেশের গণতন্ত্রের প্রতীক গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর খাদের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে জেলবন্দি অবস্থায় অসুস্থ করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে। সহানুভূতিশীল আচরণ তো দুরে থাক, তার মানবাধিকারকেও হরণ করা হয়েছে। ফ্যাসিবাদ আজ উগ্র রূপ ধারণ করেছে বলেই দেশের বৃহত্তম দলের নেত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ধুঁকছেন। ফ্যাসিস্টরা সহমর্মিতা, সহানুভূতির ধার ধারে না। এরা নির্দয় দমন-পীড়নে সকল সমালোচনা ও বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার কাজেই ব্যাপৃত থাকে। বাংলাদেশের আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এখন পৃথিবীতে দৃষ্টান্তহীন নির্মমতার ভয়ানকরূপে আত্মপ্রকাশ করেছে।’
কর্মসূচি: খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) দুপুর ১ টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করবে বিএনপি। পূর্ব ঘোষিত এ সমাবেশে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী সমর্থকদের উপস্থিত থাকার আহ্বান জানান রুহুল কবির রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/একে