বাংলাদেশ প্রিপেয়ার্ডনেস পার্টনাশীপ (বিপিপি) কার্যক্রমের আওতায় National Alliance of Humanitarian Actors, Bangladesh (NAHAB) এর উদ্দ্যোগে তিন দিনব্যাপী “Disability Inclusive Search, Rescue and Evacuation (DISRE)” প্রশিক্ষণটি কক্সবাজার জেলার হোটেল সী প্যালেস লি: আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণটি গত মঙ্গলবার ২৬ তারিখ শুরু হয় এবং অদ্য বৃহ:স্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ সমাপ্ত হয়। প্রশিক্ষণটি বিল এন্ড মিলিন্ডা গেইটস্ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টর (এডিপিসি) এর কারিগরী সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই কার্যক্রমটির সামগ্রীক সমন্বয় প্রক্রিয়াটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বিপিপি মোবিলাইজেশন ডেস্ক হতে পরিচালিত হয়। সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জনাব সানজিদা ইয়াছমিন, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মো: ইয়ামিন হোসেন এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জনাব মো: জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নাহাবের হোস্ট অর্গারাইজেশন দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থার সমন্বয়কারী (মানব সম্পদ ও প্রশাসন) জনাব মো: হুমায়ুন কবির সিকদার এবং সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন নাহাবের সমন্বয়কারী জনাব মো: রওশন আলী। এছাড়া প্রশিক্ষণটি পরিচালনায় ছিলেন সেন্টার ফর ডিজএ্যবেলিটি ইন্ ডেভেলপম্যান্ট (সিডিডি)এর দুইজন প্রশিক্ষক জনাব মো: ফরিদুল ইসলাম ও জনাব ইফতেখার আহমেদ শরফুল।
সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষনার্থীদের পক্ষে চারজন তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন (তপন কুমার শর্মা, মোষাধ্যক্ষি-বিডি স্কাউটস্, প্রীয়াংকা বড়ুযা-এইড কুমিল্লা, মো: খায়রুল ইসলাম- মুক্তি কক্স ও মো: মনিরুল আলম-এইড কুমিল্লা) এবং সকলে এক মত প্রকাশ করেন যে, প্রশিক্ষণটির মাধ্যমে তারা তাদের জ্ঞান এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তন হয়েছে এবং তাদের জানার পরিধি আরোও বেড়ে গেছে। এছাড়া বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সদস্য মো: সোহরাব বলেন, “এধরনের প্রশিক্ষণ আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে অতীব জরুরী এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিটি প্রশিক্ষণ মডিউলে এই কোর্সকে অর্ন্তভূক্ত করলে আমাদের উদ্ধার কার্যক্রম আরোও সফলভাবে সম্পন্ন করা যাবে বলে আমি মনে করছি”।
জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা জনাব মো: জাহাঙ্গীর আলম সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, “জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চালিকাশক্তিগুলো খুবই কার্যকরভাবে চার্চার আওতায় আনতে হবে এবং তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে”।
জনাব মো: ইয়ামিন হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, “প্রশিক্ষণের শিরোনামটাই আমাকে আকৃষ্ট করেছে, প্রতিবন্ধিদের সম্পর্কে জানা এবং দুর্যোগে তাদেরকে উদ্ধারের কৌশল শেখা, উপরন্তু তাদের ভাষায় তাদেরকে উদ্ধার করার প্রক্রিয়াকে আমি খুবই উৎসাহিতবোধ করছি। সর্বোপরি, আয়োজনের সাথে যুক্ত সকলকে তাদের এ উদ্দ্যোগকে ধন্যবাদ জানাই এবং ভবিষ্যতে নাহাব ও বিপিপির কর্যক্রম এই জেলায় সুন্দরভাবে পরিচালিত হউক সেই কামনা করি”।
প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব জনাব সানজিদা ইয়াছমিন বলেন, “বিপিপি কর্যক্রমটি উক্ত মন্ত্রণালয়ের বিপিপি মোবিলাইজেশন ডেস্ক হতে পরিচালিত হয় এবং আমি একজন সদস্য। বিপিপি’র আওতায় চারটি সেক্টর একত্রে কাজ করে যাচ্ছি। বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবন দেশ এবং প্রতিবছর এখানে কোন না কোন দুর্যোগ কর্তৃক আক্রন্ত হয়। সরকার প্রতিবদ্ধি ব্যক্তিদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে এবং এরই অংশ হিসেবে এই উদ্দ্যেগকে স্বাগত জানাই। সরকার সব সময়ই ভাল কাজগুলোকে সাধুবাদ জানায় এবং আমাদের সকলকে একত্রে কাজ করতে হবে। প্রতিবদ্ধি ব্যক্তিদের উদ্ধারে এই প্রশিক্ষণ কার্যকরভাবে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস। নাহাবসহ এডিপিসি, সিডিডি এবং এই প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদানের জন্য বিল এন্ড মিলিন্ডা গেইটস্ ফাউন্ডেশনকেও ধন্যবাদ জানাই। সর্বোপরি, প্রশিক্ষনার্থীদের ধন্যবাদ জানাই তারা ধর্য্য ধরে এই তিনদিন এই প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন”। সভাপতির বক্তব্যে জনাব মো: হুমায়ুন কবির সিকদার বলেন, “প্রথমেই সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই সকল অংশগ্রহনকারীকে তাদের ধর্য্য ধরে এই প্রশিক্ষণটি গ্রহন করার জন্য। আমরা স্থানীয়করণ প্রক্রিয়াকে জোরদার করেছি এবং স্থানীয় সংস্থা ইপসা আমাদেরকে সার্বিক সহায়তা প্রদান করেছেন। কাউকে বাদ দিয়ে কোন উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। উপযুক্ততার ভিত্তিতে আমরা এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছি এবং আমরা খুবই ভালো সাড়া পাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রয়াশেই দেশ এগিয়ে যাবে, সেই প্রত্যাশায় আগামীর ভবিষ্যৎ গড়তে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে”।