‘শেরপুরের মুর্শিদপুর পীরের দরবার শরীফে হামলা, লুটপাট, ভাঙ্গচুর, টাঙ্গাইলের গোপালপুরে পৌর এলাকায় ইসলামি জলসায় বাঁধা ও বন্ধ করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানিয়ে এবং গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে ”ভয়েস অব কনসাস সিটিজেন (ভিসিসি)” সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয় যে, জুলাই-আগস্ট বিপ্লব এবং অর্ন্তবর্তিকালীন সরকারকে ব্যর্থ দরবার ও মাজারে হামলা চলছে। মাজার ও ইসলামের বিভিন্ন তরিকা এবং মাসলকের প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা বন্ধ করতে হবে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে “ভয়েস অব কনসাস সিটিজেন (ভিসিসি) এর ভার্চুয়াল সভায় এ মন্তব্য করা হয়।
ভিসিসি চেয়ারপার্সন মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান আকবর মোহাম্মদ, কায়ছার উদ্দিন আল মালেকী, পরিচালক মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. সুমন মিঞা, কাউছার আজম, উপপরিচালক রবিউল আওয়াল প্রমুখ।
সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয় যে, ‘৫ আগষ্টের বিপ্লবের পর তারা মাজার ভেঙ্গেছে, এবার ঐতিহ্যবাহী মুরশিদপুর দরবার শরীফে হামলা করে মসজিদ ভেঙেছে, সেই সঙ্গে পাখিদের অভয়ারণ্যও ধ্বংস করেছে, গোপালপুরে পৌর এলাকায় ইসলামি জলসা বন্ধ করেছে। কাল সত্যপন্থি পীরদের দরগা দরবার ভাঙা হবে, পরশু ভিন্ন তরিকার মসজিদ ভাঙা হবে- এসকল নৈরাজ্য যারা করে বেড়াচ্ছেন, তারা ইসলাম ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছেন। বাংলাদেশের জনগণকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ইসলামের বৈচিত্র্য রক্ষা করতেই হবে।’
সভায় আরো অভিমত প্রকাশ করা হয় যে, ‘ষড়যন্ত্রকারী স্বার্থম্বেষী মহল বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মানুষকে হত্যাযোগ্য করছে। এই আহালে হাদিস ও সালাফীরা বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষকেই মুসলমান মনে করে না। সূফীবাদীদের এ জাহেলরা হত্যাযোগ্য করে তুলেছে। এরা প্রথমে শিয়াদের হত্যা করবে, তারপর পীর ও পীরের মুরিদদের, তারপর গণতন্ত্রপন্থীদের দেশটা ইহুদী ও ব্রাক্ষণ্যবাদীদের বিচরণ ক্ষেত্র বানিয়ে ফেলবেন। এ দেশের না ওরা, ওরা ভিনদেশের এজেন্ট।’
সভায় আরো বলা হয় যে, ‘এদেশকে ফ্যাসীবাদী এবং সালাফী তাকফিরি ইসলামপন্থিদের খেলার জায়গা বানাতে দেয়া হবে না, এ মাটি তাদের না। মনে রাখতে হবে, আহালে হাসিদের পৃষ্টপোষক আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি এডভোকেট রহমতউল্লাহ ও সালামান এফ রহমান জাতিয় সংসদে দাড়িয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে আহলাদে হাসি ও সালাফিদের সমর্থনের কথা জানিয়েছিলেন। তারা এ মাটির সঙ্গে বার বার বেঈমানি করেছে। ভুলে যাবেন না, উগ্র জঙ্গিবাদীরাই সাবেক বিএনপি-জামায়াত সরকারকে ব্যর্থ করে দিয়ে ফ্যাসিবাদীদের দীর্ঘদিনের জন্য ক্ষমতায় বসিয়েছিল। এ দুই ক্যাম্পকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করতে হবে।’
সভায় অভিমত প্রকাশ করা হয় যে, ‘এ দেশের লোকায়ত নদীময় ইসলাম, মাজার- দরগা- দায়রায় ঘেরা, মক্তব- মসজিদ- মাদ্রাসার তেলাওয়াত তাহলিলে মুখর গ্রাম বাংলা, জারি-সারি-মুর্শিদি গান আর বাঙালি মুসলমানের লোকাচার অক্ষত থাকবে, কিন্তু জাহেল উগ্রবাদীদের জাহেলিয়াত কবর দেয়া হবে। সূফীবাদীদের হত্যার পরিস্থিতি তৈরি করে লাভ নাই। নবী (সা.)’র ভালোবাসায়, আহালে বায়াত (সা.) ও অলি আল্লাহদের ভালোবাসায় সূফীবাদীরা হাসতে হাসতে মৃত্যকে বরণ করে নিবে। সূফীবাদীদের বিশ্বাস ‘আবেহায়াত তো আখেরাতে নবীজির সাথে দিদার।’