নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে অশ্লীল পোশাকের অজুহাতে এক বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তা, মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় হেনস্তাকারী নারী শিলা আক্তার সায়মাকে (৪৫) নরসিংদীর শিবপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার (৩০ মে) সকালে র্যাব-১১ নরসিংদীর ক্যাম্প কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

গ্রেপ্তারকৃত ওই নারী নরসিংদী সদরের উপজেলা মোড় এলাকার মার্জিয়া আক্তার। তবে শিলা, শায়লা এ রকম একাধিক নামে বিভিন্ন জায়গায় পরিচিত তিনি। মার্জিয়া পেশায় একজন ঘটক।
গত ২০ মে (শুক্রবার) রাত ৯টার দিকে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে পুলিশের করা মামলায় মো. ইসমাইল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সবশেষ, রোববার (৩০ মে) দিবাগত রাতে নরসিংদীর শিবপুর এলাকায় বোনের বাড়ি হতে গ্রেপ্তার হন মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলা।

র্যাব-১১ নরসিংদীর ক্যাম্প কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান বলেন, অভিযুক্ত ওই নারী পেশায় ঘটক। সে একেক জায়গায় একেক নাম-পরিচয় ব্যবহার করতো। যার ফলে শিলা, শায়লা ইত্যাদি নামে পরিচিত সে। তবে, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম মার্জিয়া আক্তার। বর্তমানে সে আমাদের হাতে আছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ মে সকালে নরসিংদী রেলস্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঢাকাগামী চট্রগ্রাম মেইল-ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। পরনের পোশাকের অজুহাতে স্টেশনে অবস্থানরত এক নারী প্রথমে ওই তরুণীকে আঘাত করেন। পরে আরও কয়েক ব্যক্তি তরুণীর ওপর হামলার চেষ্টা চালান। ভুক্তভোগী ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নিয়ে তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করেন। পরে স্টেশন মাস্টারের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই তরুণীসহ বাকিদের ঢাকাগামী ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
রেলস্টেশনে ওই তরুণীকে হেনস্থা ও মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্টদের। এতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে ঘটনার দুদিন পর শুক্রবার রাতে নরসিংদী শহরের ইউএমসি জুট মিলের সামনে থেকে ইসমাইল মিয়া নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে সোপর্দ করা হয়। ওই রাতেই নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ও ৩০ ধারায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে এক নারীসহ দুজনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত আরও এক নারী ও ১০ পুরুষকে আসামি করা হয়। পুলিশ জানায়—ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের আসামি করা হয়।