শনিবার , ২৩ জুলাই ২০২২ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. ক্যারিয়ার
  4. খেলাধুলা
  5. জাতীয়
  6. তরুণ উদ্যোক্তা
  7. ধর্ম
  8. নারী ও শিশু
  9. প্রবাস সংবাদ
  10. প্রযুক্তি
  11. প্রেস বিজ্ঞপ্তি
  12. বহি বিশ্ব
  13. বাংলাদেশ
  14. বিনোদন
  15. মতামত

‘৩০০ সিটে ৭৫০ নমিনেশন দিলে বিএনপির নির্বাচন হয় কি করে?’

প্রতিবেদক
bdnewstimes
জুলাই ২৩, ২০২২ ৯:৫৫ অপরাহ্ণ


সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে বিএনপিসহ অনেকেই প্রশ্ন তোলেন। তাদের কাছে আমার একটাই প্রশ্ন, বাংলাদেশের তিনশ সিটে যদি একটা দল সাড়ে সাতশ নমিনেশন দেয়, সেই দলের নির্বাচন হয় কি করে? একজন নিচ্ছেন বিএনপির অফিস থেকে, আরেকজন লন্ডন থেকে, আরেকজন নিচ্ছেন তাদের গুলশান অফিস থেকে।

শনিবার (২৩ জুলাই) বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন। আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক সঙ্গে এই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার শুরুতে বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনের ব্যক্তিগত লাইব্রেরি থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তৃতা করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন সংগঠনটাকে তৈরি করা, সংগঠনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। সদস্য সংগ্রহ অভিযান যেটা আমরা শুরু করেছি সেটা আমাদের করতে হবে। যাতে করে আমাদের সংগঠন আরও শক্তিশালী হয়। দেশব্যাপী কাউন্সিল করার জন্য আমাদের আটটি বিভাগে কমিটি করে দিয়েছি। কাউন্সিলগুলো যেন দ্রুত শেষ করা হয়। কারণ, সামনে আমাদের জাতীয় কাউন্সিল।’

২০০৮ সাল থেকে এই পর্যন্ত টানা মেয়াদে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়নের কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্ব ক্ষতিগ্রস্থ। বিশ্বের উন্নতদেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। আর আমরা যেহেতু বাংলাদেশে ক্ষমতায় আছি সেই কারণে অন্তত দেশটাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছি। সীমিত সম্পদ থাকার পরও আমাদের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে।’

এ সময় তিনি ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণ করেন এবং ছয় বছর বিদেশে নির্বাসিতে থেকে আওয়ামী লীগের হাল ধরে দল ও সরকারের পরিচালনায় বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বেঁচে গিয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু সেই বাঁচাটা বাঁচার মতো না। মৃত্যুর থেকেও ভয়ংকর। তারপরও আমার একটা প্রতিজ্ঞা ছিল। জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পেত। আজ তিনি আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু তার আদর্শই আমাদের চলার পাথেয়। আর সেই আদর্শ ধরেই কিন্তু এগুচ্ছি। তার সেই নীতি আদর্শ নিয়ে চলেছি বলেই পর পর তিন বার সরকারে এসে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।’

২১ বছর যারা ক্ষমতায় ছিলেন বাংলাদেশের মানুষের জন্য কী করেছেন? দেশের জন্য কী করেছেন?- এমন প্রশ্ন তুলে ধরে বিএনপির সমালোচনা করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতি, দুঃশাসন, গণতন্ত্র হরণ করেছে, জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। যত রকমের অপকর্ম করা যায় সব তারা করেছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারে আসার কারণেই এদেশের মানুষ সরকারের সেবা পেয়েছে, জনগণকে সেবা দিয়েছে। জনগণের সমর্থন পেয়েছে।’ বিএনপির শাসনামলে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ-গুম-খুন-দুর্নীতির সমালোচনা করেন এবং টানা মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যখন রাষ্ট্র পরিচালনায় আছি, তখন জানি আমাদের কী করণীয়। আমরা সেভাবেই করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। এমনকি উন্নত দেশগুলোও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে। সেখানে লোডশেডিং হচ্ছে। ইউরোপ, ইংল্যান্ড এবং আমেরিকা সব জায়গায় একই অবস্থা। কিন্তু সেটাই তারা দেখছেন না, সমালোচনা যারা করছেন করেই যাচ্ছেন।’

শেখ হাসিনা নির্বাচনি অঙ্গীকার পূরণের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। আর সেইসঙ্গে আরেকটা মন্দা দেখা দিয়েছে সমগ্র বিশ্বে। সেটা হচ্ছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং আমেরিকার স্যাংশন। যে কারণে ডলারে কেনাবেচা করা যাচ্ছে না। ডলারের দাম বেড়ে গেছে। সাথে সাথে তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে, জ্বালানির দাম বেড়ে যাচ্ছে। ভোজ্য তেলের দাম বেড়ে যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো সেখানেও খাদ্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়েছি। যেটা আমাদের লক্ষ্য ছিল। সেই লক্ষ্য আমরা অর্জন করেছি। কিন্তু আজ বিশেষ করে যুদ্ধের কারণে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে। এমনকি উন্নত দেশগুলোও বিদ্যুৎ সাশ্রয় করছে। সেখানে লোডশেডিং হচ্ছে। ইউরোপ, ইংল্যান্ড এবং আমেরিকা সব জায়গায় একই অবস্থা কিন্তু। সেটাই তারা দেখছেন না। আমাদের সমালোচনা যারা করছেন করেই যাচ্ছেন।’

বর্তমান প্রেক্ষাপটে কৃচ্ছ্বতা সাধনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির আমলে বিদ্যুৎতের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরে তাদের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যাদের আমলে এই রকম ঘটনা ঘটেছে আজ তাদের কাছ থেকে কথা শুনতে হয়। বিএনপি বলছে, প্রাইভেট সেক্টরে বিদ্যুৎ দেওয়া নাকি ঠিক হয়নি। প্রাইভেট সেক্টর আমরা উন্মুক্ত করে দিয়েছি বলেই আজ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। বেকারত্ব হ্রাস পাচ্ছে, অর্থনীতি চাঙ্গা হচ্ছে। কারণ একা সরকারের পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব না। আমাদের সংবিধানে ১৩ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট আছে, অর্থনৈতিক নীতিমালা হবে সরকারি, বেসরকারি এবং কো-অপারেটিভ।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করা আছে। আমরা চাই, আমাদের দেশটা যেন আরও উন্নত হয়, দেশের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। আজ প্রাইভেট সেক্টরের বিদ্যুৎ নিয়ে সমালোচনা করেন অনেকেই। এদেশে প্রাইভেট সেক্টরে যে এতগুলো টেলিভিশন দিলাম তাহলে সেগুলো বন্ধ করে দিক। টেলিভিশন, বিমা, ব্যাংক, হেলিকপ্টারসহ এমন কোনো সেক্টর নাই যেটা আমরা বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করি নাই। যাতে আমার কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয় আমি তো সেটাই আগে দেখব। বাংলাদেশে কোনো মানুষই গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।’ যাদের ঘরবাড়ি করে দেওয়া হয়েছে তাদের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের দলের নেতাকের্মীদের সহযোগিতার হাত নিয়ে পাশে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং যেকোন দুযোগ-দুর্বিপাকে আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে থাকে এবং কাজ করে যায় বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। বন্যায় মানুষের পাশে বিএনপির না দাঁড়ানোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা ডিজটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। সেই সুবাদে ঘরে বসে বসে তারা বক্তব্য দিচ্ছে আর সরকারের সমালোচনা করছে। কতটুকু ত্রাণ দিয়েছে আমি জানি না। কারণ, দেখিনি।

কিছু লোক আছেই সারাক্ষণ দোষ আর খুঁত ধরার চেষ্টায় থাকে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আজ আমরা বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে বলেছি। বিদ্যুতের লোডশেডিং দিচ্ছি। কারণ ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে, এলএনজির দাম বেড়ে গেছে। প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। যে জার্মানি সুর তুলে দিল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প করা যাবে না। সেই জার্মানিই কিন্তু ফের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে ফেরত আসছে।’

জাতিসংঘ সেক্রেটারি জেনারেলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল উদ্যোগটা নিয়েছিলেন। সেই উদ্যোগে ইউক্রেন-রাশিয়া একটা চুক্তি করেছে। এই চুক্তির ফলে এখন সার ও খাদ্যদ্রব্য কৃঞ্চ সাগর দিয়ে যেতে দেবে। সেগুলো চলাচলের সুযোগ করে দেবে। এটা আমাদের জন্য একটা স্বস্তির কথা। সেজন্য জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যার জন্য খাদ্যের যে অভাব, সেটা আর থাকবে না।’

নেতাকর্মীদের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ প্রত্যেকের যার যতুটুক জমি আছে সেগুলোতে চাষাবাদ করার ব্যাপারে উৎসাহ ও উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের সেবাটা নিশ্চিত হয়। আর বিএনপি থাকা মানে দুর্নীতি সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ, অর্থপাচার। তারা দেশের জন্য কাজ করবে না, এটা হচ্ছে বাস্তব কথা। যারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে তাদের ব্যাপারে বলতে চাই, বাংলাদেশে যদি নির্বাচনি ক্ষেত্রে কোনো ডিসিপ্লিন এসে থাকে সেটা আওয়ামী লীগের ফসল। আমরা মহাজোট করেছিলাম। দলের পক্ষ থেকে মহাজোটের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সংস্কার আমরাই এনেছি। ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ভোটার বাক্স।’ বিএনপি ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় এদেশের জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের সমালোচনা যারা করে তাদের এইটাই বলব, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হয়, অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, আর্থ সামাজিক উন্নতি হয়। অন্তত মানুষ ভালো থাকে।’

ওবায়দুল কাদের আসন্ন শোকাবহ আগস্ট মাসব্যাপী কর্মসূচিগুলো উপস্থাপন করেন তিনি। পরে আওয়ামী লীগ নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে বাকি কর্মসূচিগুলো চূড়ান্ত করেন। সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দফতর সম্পাদকব ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। এছাড়াও ঢাকা মহানগর ও সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম





Source link

সর্বশেষ - খেলাধুলা