আমাদের শরীরে বিভিন্ন প্রোটিনের প্রয়োজন রয়েছে। দেহের স্বাস্থ্যকর কার্যকারিতার জন্য প্রোটিন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। বিপাক থেকে শুরু করে পেশি সংশ্লেষণ পর্যন্ত প্রোটিনের ভূমিকা অপরিসীম। ফলে এটি আমাদের ডায়েটের একটি অপরিহার্য অংশ হওয়া উচিত এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রোটিনযুক্ত খাওয়ার পাতে রাখতেই হবে। উদাহরণস্বরূপ, যে ব্যক্তি নিয়মিত জিম করেন তাঁর অন্যান্যদের তুলনায় আরও বেশি প্রোটিনের প্রয়োজন। বোল্ডফিটের প্রতিষ্ঠাতা পল্লব বিহানি (Pallav Bihani) আইএএনএসলাইফের (IANSlife) সঙ্গে প্রোটিনের ঘাটতির গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলি ভাগ করে নিয়েছেন-
১.আপনি কি মেদ কমাতে পারছেন না?
আপনি কি নিরলসভাবে কাজ করছেন, ঠিকঠাক খাচ্ছেন কিন্তু তারপরেও অতিরিক্ত মেদ কমছে না? তবে আপনার প্রোটিন দরকার। আপনি যখন পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করবেন না, তখন দেহের পেশিগুলি ঠিকঠাক কাজ করতে পারে না এবং শরীরের ভেতরের কার্যকলাপ কম গতিসম্পন্ন হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় খাবারের অভাবে মেটাবলিক সিস্টেমের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে খাবারের ক্যালোরি চর্বি হয়ে শরীরে জমা হতে শুরু করে। তাই প্রোটিনযুক্ত খাওয়ার খেতেই হবে।
২. খিটখিটে মেজাজ:
কম প্রোটিন গ্রহণের ফলে আমাদের অস্থির এবং খিটখিটে মেজাজ হয়। আমাদের মেজাজের জন্য দায়ী বিভিন্ন হরমোন এবং নিউরোট্রান্সমিটার সংশ্লেষণের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন সেরোটোনিন হরমোন যা একজনকে ফুরফুরে মেজাজে রাখতে সাহায্য করে। প্রোটিনের উপর আমাদের মানসিক অবস্থারও ওঠানামা হতে পারে।
৩. ক্লান্তি:
আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন প্রয়োজন। তাই অপর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করলে তা আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়। যার ফলে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়। এছাড়াও প্রোটিন শরীরের অন্যতম প্রয়োজনীয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস। যদি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে তা হলে শরীর খিদের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে তা মেটানোর চেষ্টা করে। ফলে ওজন বেড়ে যেতে পারে এবং হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
৪. হাড়ের ক্ষয়
পেশি গঠনে ও মজবুত করতে সাহায্য করে প্রোটিন। তাই বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, যাঁরা বডি বিল্ডিং করেন বা মাসল বিল্ডিং করেন, তাঁরা প্রোটিন জুস বা শেক খেয়ে থাকেন। যদি শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকে, তা হলে পেশিতে জোর থাকবে না। কোনও ভারী জিনিস তুলতেও সমস্যা হবে। প্রোটিন আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি অ্যান্টিবডি নির্মাণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোয় সাহায্য করে। সুতরাং যখন প্রোটিনের ঘাটতি হয় তখন ইমিউনিটি সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়াও হাড়ের জন্য ক্যালসিয়াম অপরিহার্য, তবে আমাদের হাড়ের ৫০ শতাংশই ক্যালসিয়াম। ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের পাশাপাশি ডায়েটরি প্রোটিন হাড়ের স্বাস্থ্য এবং দীর্ঘদিন মজবুত রাখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
৫. ত্বক, চুল এবং নখের সমস্যা:
ত্বক, চুল এবং নখ প্রাথমিক ভাবে প্রোটিন দিয়ে তৈরি, এবং তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রোটিনের ঘাটতি তাদের উপরও প্রভাবিত হয়। প্রোটিনের ঘাটতিতে ত্বকে লালচে ভাব সহ আরও নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও এটি চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, চুল পড়া এবং নখের সাদা হওয়ার কারণও হতে পারে। যার ফলে ত্বকের বলিরেখা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। হাড় এবং পেশি দুই’ই প্রোটিনের অভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শক্তিশালী হাড়ের জন্য প্রোটিন অত্যন্ত অপরিহার্য ।এছাড়াও প্রোটিনের অভাবে দেহে ফোলাভাব তৈরি হতে পারে।