মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারও অভিযোগ করেছেন, এ দেশের সব আইনই মূলত মহিলাদের পক্ষে৷ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিচার চেয়ে আর্জি জানিয়েছেন তরুণ ওই ইঞ্জিনিয়রের পরিবার৷ অতুলের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সমাজমাধ্যমেও বিতর্কের ঝড় উঠেছে৷ সমাজমাধ্যমে ট্রেন্ডিং হয়েছে #MenToo ৷
আরও পড়ুন: ‘বিচার পেলাম না!’ পর পর মামলা স্ত্রীর, ২৪ পাতার চিঠি লিখে আত্মঘাতী ৩৪ বছরের ইঞ্জিনিয়র
মৃত্যুর আগে চব্বিশ পাতার একটি সুইসাইড নোট এবং ভিডিও বার্তা রেখে যান তিনি৷ একের পর এক মিথ্যে মামলা করে তাঁর স্ত্রী কীভাবে তাঁকে দিনের পর দিন নির্যাতন করেছেন, তার বিবরণ দিয়ে গিয়েছেন অতুল৷ শুধু তাই নয়, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে তিনি দাবি করেন, উত্তর প্রদেশের জৌনপুরের যে আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছিল, সেখানকার মহিলা বিচারকও ঘুষের বিনিময় তাঁর মামলা ঝুলিয়ে রেখেছিলেন৷
মৃত্যুর আগে আক্ষেপের সুরে অতুল বলে যান, ‘এই মুহূর্তে আইনকে ঢাল করেই ভারতে পুরুষদের হত্যালীলা চলছে৷’ অতুলের ঝুলন্ত দেহ যখন পুলিশ উদ্ধার করে, তখন তাঁর গলায় একটি প্ল্যাকার্ড ঝোলান ছিল৷ তাতে অতুল লিখে যান, ‘বিচার পেলাম না৷’
#WATCH | A 34-year-old deputy general manager of a private firm in Karnataka’s Bengaluru, Atul Subash died by suicide on Monday, leaving behind a 24-page suicide note accusing his wife, her family members, and a judge of “explicit instigation for suicide, harassment, extortion,… pic.twitter.com/GpMnZXtZjI
— ANI (@ANI) December 10, 2024
অতুলের বাবা পবন কুমার জানিয়েছেন, হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়লেও নিজের ভিতরের যন্ত্রণার কথা কোনওদিন কাউকে বুঝতে দেননি তাঁর ছেলে৷ অতুলের বাবাও জানিয়েছেন, ছেলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ এনে মামলা করেছেন তাঁর পুত্রবধূ৷
সদ্য সন্তানহারা ওই বৃদ্ধ বলেন, ‘আমার ছেলে বলে গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পারিবারিক বিবাদের নিষ্পত্তির দায়িত্বে থাকা আদালতগুলি ঠিক মতো কাজ করে না৷ আমার ছেলে বেঙ্গালুরুতে থাকলেও মামলা কারণে অন্তত চল্লিশ বার তাঁকে জৌনপুরে আসতে হয়েছে৷ আমার পুত্রবধূ ছেলের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করেছে৷ সেই কারণেই সম্ভবত ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল৷ কিন্তু কোনওদিন আমাদের তার আঁচ পেতে দেয়নি৷’
পবন কুমার জানিয়েছেন, আত্মহত্যার ঠিক আগে রাত একটা নাগাদ নিজের ভাইকে একটি ই মেল পাঠান অতুল৷ তার পরই ঘটনার কথা জানতে পারেন তাঁরা৷ কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে৷ অতুলের ছোট ভাই বিকাশও আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘দেশের সব আইনই মহিলাদের জন্য৷ তিনি আরও জানান, প্রায় ৮ মাস ধরে আমার বৌদি দাদার থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছেন৷ এর পর তিনি ডিভোর্স মামলা করেন এবং আমার দাদা সহ আমাদের গোটা পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আনেন৷ দেশের সব আইনই মহিলাদের পক্ষে, পুরুষদের পক্ষে কোনও আইন নেই৷ আমার দাদা এর বিরুদ্ধেই লড়তে চেয়েছিল, কিন্তু দাদাই আমাদের ছেড়ে চলে গেল৷’
নিজের দাদার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করেছেন বিকাশ৷ তিনি বলেন, ‘দাদা সুইসাইড নোটে লিখে গিয়েছে যদি এই মামলায় শেষ পর্যন্ত ও নির্দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলেই ওঁর অস্থি গঙ্গায় ভাসাতে৷ তা না হলে আদালতের বাইরে কোনও নর্দমায় তা ফেলে দিতে৷’
বিকাশের আক্ষেপ, তাঁকে অথবা তাঁদের বাবাকে অতুল একবার তাঁর যন্ত্রণার কথা জানালে দাদার এই পরিণতি হতে দিতেন না তাঁরা৷ নিজের বউদির পাশাপাশি জৌনপুরের যে আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে অতুল ঘুষ নিয়ে তাঁকে হয়রানির অভিযোগ তুলে গিয়েছেন, সেই বিচারকের বিরুদ্ধেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মৃত ইঞ্জিনিয়রের ভাই৷
Kolkata,West Bengal
December 11, 2024 12:31 AM IST
Bengaluru engineer death: ‘মহিলাদের পক্ষেই সব আইন!’ আক্ষেপ মৃত ইঞ্জিনিয়রের পরিবারের, বেঙ্গালুরুর ঘটনায় ক্ষোভে ফুটছে দেশ