সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: দেশের লজিস্টিকস খাতের ডিজিটালাইজেশনে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে লজিস্টিকস ট্র্যাকিং ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করতে সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি) বাস্তবায়ন সম্পর্কিত এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) ও অ্যাকসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) যৌথ উদ্যোগে বুধবার (১০ জুলাই) বেসিস সভাকক্ষে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতর, কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, ই-ক্যাব, বিভিন্ন বেসরকারি লজিস্টিকস কোম্পানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা কর্মশালায় অংশ নেন।
কর্মশালায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের উপসচিব মুহাম্মদ সাঈদ আলী বলেন, লজিস্টিকস খাতের ডিজিটালাইজেশন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সিএলটিপির মাধ্যমে আমরা লজিস্টিকস কার্যক্রমকে আরও সুশৃঙ্খল ও স্বচ্ছ করে তুলতে পারব, যা আমাদের দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বেসিস পরিচালক ও ই-কুরিয়ারের প্রধান নির্বাহী (সিইও) বিপ্লব ঘোষ রাহুল। এই সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্মের মূল লক্ষ্য উদীয়মান পার্সেল ডেলিভারি খাত ও ই-কমার্স খাতের ডেলিভারির ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনা এবং পেমেন্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত এসক্রো নীতিমালা বাস্তবায়ন। পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রণয়ন করা জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রণয়ন করা জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা ২০২৪-এ সিএলটিপি বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
কর্মশালায় বলা হয়, এই প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে সব লজিস্টিকস কোম্পানি (কুরিয়ার সার্ভিস), ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, সব পেমেন্ট গেটওয়ে (পিএসও, পিএসপি, ব্যাংক ইত্যাদি) এবং বিভিন্ন সরকারি আইন প্রয়োগকারী ও নীতি প্রণয়নকারী সংস্থাগুলো সিএলটিপি সিস্টেমের সঙ্গে এপিআইয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকবে। এ সব কানেক্টিভিটি সম্পন্ন হলে গ্রাহক পর্যায়ে পার্সেল পাওয়া ও এ সংক্রান্ত তথ্য প্রদান অধিকতর সহজ হবে। একইভাবে নীতি ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ খাত সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা পাবে, যা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
কর্মশালার মূল লক্ষ্য ছিল দেশের লজিস্টিকস খাতের ডিজিটালাইজেশনকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে লজিস্টিকস ট্র্যাকিং ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা, সব লজিস্টিকস ট্র্যাকিং ব্যবস্থাকে গ্রাহকদের কাছে আরও সহজ করা এবং তাদের তথ্যগুলো একটি নির্দিষ্ট প্লাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরেন এটুআইয়ের গ্রামীণ ই-কমার্স ও হেড অব কমার্শিয়ালাইজেশন রেজওয়ানুল হক জামি।
কর্মশালায় উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা বেশ কিছু পরামর্শ দেন। এর মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলো— সিএলটিপি প্ল্যাটফর্ম থেকে এসএমএসের মাধ্যমে যেন গ্রাহকের কাছে নোটিফিকেশন পাঠানো হয়। পাশাপাশি নোটিফিকেশন পাওয়ার একটি নির্দিষ্ট সময় পরে গ্রাহকদের স্ট্যাটাসও যেন পরিবর্তন হয়। গ্রাহকরা যে টোকেন পাবেন সেটা যেন গ্রাহকের অর্ডারের তারিখ অনুযায়ী সংগৃহীত হয়, যেন গ্রাহকের একাধিক অর্ডার ট্র্যাকিং করতে সহজ হয়।
এ ছাড়াও ওটিপির মাধ্যমে গ্রাহকের অর্ডারের তথ্য নিশ্চিত করার জন্য পরামর্শ দেন সংশ্লিষ্টরা। বলেন, সিএলটিপি প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কেন্দ্রীয় অভিযোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা (সিসিএমএস) সম্পৃক্ত থাকবে, যেন গ্রাহকরা তাদের অভিযোগগুলো সহজে জানাতে পারে।
প্রসঙ্গত, সিএলটিপি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অধিভুক্ত একটি অত্যাধুনিক প্ল্যাটফর্ম, যা লজিস্টিকস কোম্পানিগুলোকে তাদের পণ্য পরিবহন কার্যক্রমকে আরও দক্ষতা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনা করতে সহায়তা করে। বেসিসের এই কর্মশালার আয়োজনের সহায়তায় ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর