আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মহাকাশ নিয়ে গষেণার যেন শেষ নেই বিজ্ঞানীদের। মহাবিশ্বের অজনা রহস্য উদঘাটন করে পৃথিবীকে আরও নিরাপদ ও বাসযোগ্য করাই এসব গবেষণার মূল লক্ষ্য। এবার ভবিষ্যতে সম্ভব্য যেকোনো হুমকি থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ লক্ষ্যে একটি মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করবে মার্কিন গবেষণা সংস্থা নাসা। খবর সিবিসি নিউজ।
মহাকাশযানটি উপগ্রহকে ধাক্কা দিতে পারবে কি না— সেটা পরীক্ষা করাই হবে এই গবেষণার মূল লক্ষ্য। আগামীকাল সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এই যান উৎক্ষেপণ করবে নাসা।
তবে এক্ষেত্রে আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই। কারণ উপগ্রহটি দু’টি অংশে বিভক্ত, ফলে এটি পৃথিবীর জন্য হুমকি নয়। অন্তত আগামী ১০০ বছরে তা আমাদের পথ আসার কোনো সম্ভবনা নেই। মূলত ইউএস ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স এবং স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মতো মহাকাশ সংস্থাগুলো সম্ভব্য যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতেই এই গবেষণা শুরু করেছে।
নাসার ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট (ডিএআরটি) এমন পরীক্ষা করছে— যেখানে একটি মহাকাশযান পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হবে এমন ধাবমান একটি উপগ্রহকে তার কক্ষপথের বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে।
আগামী সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ১৪ মিনিটে রেফ্রিজারেটর-আকারের মহাকাশযানটি উপগ্রহ ডিমারফোস’কে ধাক্কা দেবে। যানটি সেকেন্ডে প্রায় ৬ দশমিক ৬ কিলোমিটার গতিতে চাঁদের পার্শ্ববর্তী উপগ্রহ ডিডিমোস’কে প্রদক্ষিণ করবে।
এই পরীক্ষার লক্ষ্য ডিমারফোস’কে তার কক্ষপথ থেকে সরিয়ে দেওয়া নয়। বরং ডিডিমোস’র ১২ ঘণ্টার কক্ষপথ ১০ মিনিটে পরিবর্তন করা। এর অর্থ, বিজ্ঞানীরা ১২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে পারবেন তারা সফল হয়েছেন কি না।
এই পরীক্ষার জন্য দুই অংশে বিভক্ত উপগ্রহকে (বাইনারি সিস্টেম) বেছে নেওয়া সঠিক সিন্ধান্ত ছিল বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ফলিত পদার্থবিদ্যা ল্যাবরেটরির একজন সিনিয়র বিজ্ঞানী। ডিএআরটি গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, যদি একটি উপগ্রহকে আমরা প্রভাবিত করতে পারি, তাহলে অন্যগুলোর ক্ষেত্রেও তা সম্ভব হবে। আর কক্ষপথ পরিবর্তন করার বিষয়টি চিহ্নিত করার জন্য আমাদের সূর্যের চারপাশে উপগ্রহটির কক্ষপথ সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এটি সম্পন্ন হতে অনেক বা একাধিক বছর সময় লাগতে পারে।’
‘অন্য সুবিধা হল এই উপগ্রহটি (বাইনারি সিস্টেম) আমাদের অপেক্ষাকৃত কাছাকাছি, জ্যোতির্বিদ্যাগতভাবে বলতে গেলে, মাত্র ১ কোটি ১০ লাখ কিলোমিটার দূরে।’
টরন্টোতে অবস্থিত ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ল্যাসোন্ডে স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপক এবং ডিএআরটি’র সহ-গবেষক মাইক ডালি বলেন, ‘জনপ্রিয় ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো উপগ্রহগুলোকে সত্যিকারের হুমকি হয়ে ওঠার আগে বিচ্যুত করা। কিন্তু এর মানে আমাদের অগ্রিম সতর্কতা থাকা দরকার যে, কেউ আমাদের পথে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই সবচেয়ে সহজ পদ্ধতিটির প্রয়োগ করতে যাচ্ছে ডিএআরটি। একটি মহাকাশযানকে উচ্চ গতিতে নিয়ে যাওয়া এবং উপগ্রহতে বিধ্বস্ত করা। এর ফলে সৃষ্ট শক্তিকে উপগ্রহটিকে তার কক্ষপথ থেকে সরানোর কাজে ব্যবহার করা।’
সারাবাংলা/এনএস